রংপুর মেডিক্যালে আগুন, পুড়ে গেলো পরীক্ষার যন্ত্র

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি কক্ষে আগুন লেগেছে। এতে মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মেশিনের ক্ষতি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে হাসপাতালের নিচতলার এমআরআই, ইসিজি ও আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষ থেকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখেন মেডিক্যালের কর্মচারীরা। তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। এই অবস্থায় কয়েকজন কর্মচারী কক্ষের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের সার্কিটের সুইচ বন্ধ করে দেন। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সেখানে এসে আধাঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।

তবে কী কারণে আগুন লাগলো ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কিছুই জানাতে রাজি হয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের এমআরআই, সিটি স্ক্যান মেশিনসহ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সর্বাধুনিক যন্ত্র দীর্ঘদিন ধরে পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়েছিল। উচ্চমূল্যে কেনা এসব যন্ত্র ছিল নিম্নমানের। অনেকবার সচলের চেষ্টা করেও বেশিদিন সচল রাখা সম্ভব হয়নি। ফলে নিম্নমানের এসব যন্ত্র নিয়ে সমালোচনা থাকায় একটি মহলকে বাঁচাতেও এই আগুন লাগতে পারে।

হাসপাতালের লিফটম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সকালে হঠাৎ এমআরআই কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখি। এটা দেখে অনেকেই ছুটোছুটি শুরু করেন। আমরা কয়েকজন ওই কক্ষের দরজায় থাকা তালাটি হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দেই। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সেলিম বলেন, আমি গেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ দেখি লোকজন ভয়ে ছোটাছুটি করছে। জানতে পারি, এমআরআই কক্ষে আগুন লেগেছে। আমি সেখান থেকে দৌড়ে ভেতরে এসে দেখি, ধোঁয়ায় চারপাশ অন্ধকার। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নিয়ে কক্ষের ভেতরে ঢুকে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। তখন পর্যন্ত আগুনের সূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এতবেশি ধোঁয়া সেখানে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।

হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল ইসলাম বলেন, ভবনটি অনেক পুরোনো এবং বৈদ্যুতিক ওয়ারিং নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই কারণে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, আগুন লাগার কারণ এখন নিশ্চিত বলা সম্ভব নয়। তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।