এসএসসির প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তে কমিটি

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার একটি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে এসএসসির প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড। এই শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ফারাজ উদ্দিন তালুকদারকে প্রধান করে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) তিন সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর হারুন অর রশীদ মন্ডল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক আখতারুজ্জামান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম জানান, কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি পরীক্ষার গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, কৃষি ও রসায়নের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকালে বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নোটিশের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে ভূরুঙ্গামারীর নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানসহ তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে মামলার এজাহারে ছয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে চারটির পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করাক হয়েছে, মঙ্গলবার এসএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নফাঁসের গুজব ওঠায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ট্যাগ কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আদম মালিক চৌধুরী বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার দেব শর্মার নজরে আনেন। এরপর পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানের কক্ষে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ট্যাগ কর্মকর্তা। প্রথমে প্রধান শিক্ষক সদুত্তর না দিলেও পরে অধিকতর জিজ্ঞাসায় তিনি স্বীকার করেন, তার কাছে পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রয়েছে। এরপর তিনি তার রুমের বুকশেলফের নিচের তাক থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগের মধ্যে প্যাকেটে রাখা কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বের করে দেন।

ব্যাগের ভেতর থেকে গণিত, উচ্চতর গণিত, রসায়ন, কৃষি, জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্র বের করা হয়। এর মধ্যে একটি প্যাকেট ছাড়া বাকি সব প্যাকেটের মুখ খোলা ছিল। তখন ট্যাগ কর্মকর্তার নির্দেশে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এসআই সাঈদ মো. আতিক নুর উল্লেখিত এসব বিষয়ের প্রশ্নপত্রের জব্দ তালিকা করেন। সেই সঙ্গে প্রধান শিক্ষককে হেফাজতে নেন।

পরে জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান শিক্ষক জানান, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আবু হানিফের সহায়তায় কৌশলে পূর্বের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্যাকেটে করে জব্দ করা প্রশ্নপত্রগুলো নিয়ে আসেন তারা। এরপর ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক জোবায়ের হোসেন ও অফিস সহকারী আবু হানিফসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের সহযোগিতায় প্রশ্নফাঁস করেন।