বিএনপির চেয়ে আ.লীগ এক ডিগ্রি বেশি করছে: জি এম কাদের

দেশের অবস্থা ভালো না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপ-নেতা জি এম কাদের। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারকে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম গণতন্ত্রকে সরকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে, দুর্নীতি দূর হবে, জুলুম-নির্যাতন থাকবে না। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য তারা সুশাসন নিশ্চিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি যা করেছে এই সরকার তার থেকে এক ডিগ্রি বেশি করছে। এ কারণে সরকারের কর্মকাণ্ডে জাতীয় পার্টি পুরোপুরি হতাশ। এ অবস্থায় সামনের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। 

সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এরআগে তিনি ১২টার দিকে ঢাকা থেকে বিমানযোগে সৈয়দপুরে পৌঁছান।  

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুবই নাজুক উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, মেগা প্রকল্পের নামে নেওয়া ঋণের বোঝা সরকার বইতে পারবে না বলে সন্দেহ করছি। দেশের রফতানি ও প্রবাসী আয়ও কমে যাচ্ছে। আমদানি ব্যয়ও বাড়ছে, কমছে রিজার্ভ। এটি দেশের জন্য খুবই ভয়াবহ।  

সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ দাবি করে তিনি আরও বলেন, সরকার যে দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ তা সংসদে এবং বাইরে অনেকবার বলেছি। সামনে নির্বাচন, কী হবে বুঝতে পারছি না। নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে বলেও মনে হচ্ছে না। দেশ এখন পুরোপুরি অনিশ্চয়তার দোলাচলে দুলছে। 

এ সময় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জাতীয় পার্টির মত জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ওপর আমাদের দলের ভবিষৎ নির্ভর করে। নির্বাচনে না গেলে আমাদের অস্তিত্ব টিকে থাকবে কিনা সে বিষয়ে তৃণমূল থেকে ওপর পর্যায়ে আলোচনা করে দেশে ও জাতির সামনে তা উপস্থাপন করা হবে। 

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টি গোপন আঁতাত করেছে কিনা, জানতে চাইলে দলের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা গোপন আঁতাত কিংবা গোপন কিছুতে বিশ্বাসী নই। যা করি স্বচ্ছভাবে করি। যা করার তা প্রকাশ্যেই হবে। 

রওশন এরশাদ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আব্দুর রউফ নামে সাবেক পৌর মেয়রকে মনোয়ন দিয়েছেন এ ঘটনায় তাকে দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি রওশন এরশাদের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, এসব কথার আইনগত ভিত্তি নেই। তবে নির্বাচন এলে অংশ নিতে আগ্রহ দেখান। দুই থেকে চার জন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে আবারও মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়ে দিয়েছি। তিনিই আমাদের দলের প্রার্থী। এটা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।

আগামী নির্বাচনে রংপুর সদর-৩ আসনে প্রার্থী হবেন শোনা যাচ্ছে, এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে। 

উল্লেখ্য রংপুর সদর-৩ আসনে রওশন এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদ বর্তমান এমপি। 

এরআগে, শতাধিক মোটরসাইকেলের বহরসহ সৈয়দপুর বিমান বন্দর থেকে রংপুরে আসেন জি এম কাদের। এরপর তাকে সার্কিট হাউজে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা জাপা সভাপতি আবুল মাসুদ চৌধুরী নান্টু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রাজ্জাক ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এসএম ইায়াসিরসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।