‘ঘুষিতে’ ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বোনেরও মৃত্যুর ঘটনায় মামলা

কুড়িগ্রামের সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে বিবাদে আবুল কালাম আজাদ (৭৫) ও তার বড় বোন ছকিনা খাতুনের (৭৮) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে আবুল কালাম আজাদের ছেলে আনিছুর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, ছকিনা খাতুনের জানাজা শেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে দাফন করা হয়েছে। আর ময়নাতদন্ত শেষে নিহত আবুল কালাম আজাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

আবুল কালাম আজাদ ও ছকিনার মৃত্যুর ঘটনায় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ এক পরিবারের ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন অভিযুক্ত কাঠ ব্যবসায়ী দুলাল হোসেনের ভাই ইকবাল, নুর জামাল ও নুর বকশ এবং ইকবালের স্ত্রী আলেয়া খাতুন, দুই ছেলে মিজানুর ও আশরাফুল। তারা অভিযুক্ত জুবায়ের ও তার বাবা দুলালের সঙ্গে নিহত আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে হামলায় অংশ নিয়েছিলেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। তবে মূল অভিযুক্ত দুলাল হোসেন, তার স্ত্রী জ্যোৎস্না এবং ছেলে জুবায়েসহ এজাহারনামীয় অপর ছয় জন পলাতক।

এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামে আম গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে বিবাদে জুবায়ের নামে এক যুবকের ‘কিলঘুষিতে’ আবুল কালাম আজাদ নামে এক বৃদ্ধ গুরুতর অসুস্থ হন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আবুল কালামের মৃত্যুর খবর শুনে তার বড় বোন ছকিনা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

ঘটনার পর জুবায়ের, তার বাবা দুলাল হোসেন ও মা জ্যোৎস্না পালিয়ে গেলেও তাদের সঙ্গে হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। নিরাপত্তা বিবেচনায় পুলিশ ছয় জনকে আটক করে থানায় নেয়। পরে এ ঘটনায় নিহত আজাদের ছেলে আনিছুর থানায় মামলা করলে আটক ব্যক্তিদের গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আটক ব্যক্তিদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’