ধানক্ষেতে কোচিং সেন্টার শিক্ষকের লাশ, স্বজনদের দাবি হত্যা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় হোসাইন আলী (২৫) নামে এক কোচিং সেন্টার শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন হোসাইন আলীর স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া বাজারের রাস্তার পাশের ধানক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। হোসাইন ভরনিয়া চেংবাড়ী সম্পদবাড়ি এলাকার নুরুল হোসেনের ছেলে। তিনি স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাঁটাহাঁটির সময় রাস্তার পাশের ধানক্ষেতে লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। তারা পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

হোসাইন আলীর স্বজনরা দাবি করেছেন, পূর্বশত্রুতার জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে।

হোসাইনের বোন রুমি বলেন, একই গ্রামের অনুকূল ও তার ভাই ইশার সঙ্গে হোসাইনের মামলা চলছে। কারণ দেড় বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে অনুকূলের মেয়ের সঙ্গে হোসাইনের বিয়ে হয়। ওই বিয়ে মেনে নেননি অনুকূল। মামলা করে হোসাইনের কাছ থেকে মেয়েকে নিয়ে যান।

হোসাইনের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমার ভাইকে রাস্তায় আটক করেছিল অনুকূল। সেদিন হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দেখে নেবো। এরই মধ্যে তার লাশ পাওয়া গেলো।’

রুমি বলেন, ‘কোচিং সেন্টারে কয়েকদিন আগে পড়ায় গাফিলতির কারণে এক শিক্ষার্থীকে শাসন করেন হোসাইন। সে কারণে তাকে হুমকি দেন ভরনিয়া এলাকার মুসা মাস্টার। অনুকূল, ইশা ও মুসা মাস্টার মিলে আমার ভাইকে হত্যা করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে রেখেছে।’

এ বিষয়ে মুসা মাস্টার বলেন, ‘কোচিংয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের কারণে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আমার কাছে বিচার নিয়ে এসেছিলেন। আমি সেই বিচার না করে চেয়ারম্যানের কাছে পাঠিয়েছি। তাকে কোনও ধরনের হুমকি দিইনি।’

ধর্মগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে মারধরের একটি অভিযোগ এসেছিল। স্থানীয় বিএসসি শিক্ষক মোশাররফ বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। সেটি নিয়ে কারও আপত্তি ছিল না।’

রানীশংকৈল থানার ওসি এস এম জাহিদ ইকবাল বলেন, ‘লাশের ডান হাত ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’

স্বজনদের অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাদের বিষয়টি মাথায় নিয়ে ঘটনার তদন্ত করছি আমরা।’