বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় যুবলীগ নেতাকে অব্যাহতি

উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাইদুল ইসলাম মিনুকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) যুবলীগ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. রুহুল আমিন দুলাল ও তিন যুগ্ম আহ্বায়ক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। যুবলীগ কুড়িগ্রা৬ম জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আনিছুর রহমান খন্দকার চাঁদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রৌমারী উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো. জাইদুল ইসলাম মিনু (রৌমারী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক) দলের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। যা সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী। সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তর না দেওয়ায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের নির্দেশক্রমে মো. জাইদুল ইসলাম মিনুকে রৌমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।’

প্রসঙ্গত, আগামী ২ নভেম্বর রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনে সাত প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যুবলীগ নেতা জাইদুল ইসলাম মিনু হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনু দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফালু কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ হতে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া জাইদুল ইসলাম মিনু বলেন, ‘আমি বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। এখনও আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। তবে এ নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য নেই। আমি বর্তমানে আমার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি।’

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অব্যাহতি পাওয়া এই যুবলীগ নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি নির্বাচনে জয়লাভ করার মতো আমার জনপ্রিয়তা রয়েছে। আমি এর আগে জেলা পরিষদের সদস্য ছিলাম, মানুষের জন্য কাজ করেছি। আমি মনে করি সাধারণ মানুষ আমাকে চায়। তাই এবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছি।’

‘শুধু আমি কেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফালু কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাকে তো আওয়ামী লীগ বহিষ্কার করেনি। তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেননি? আমাকে বহিষ্কার করলে তাকেও তো বহিষ্কার করার কথা। আমি মনে করি আমাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পেছনে অন্যের ইন্ধন রয়েছে। তবে আমি নির্বাচনে জয় লাভের বিষয়ে আশাবাদী’ , বলেন মিনু।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনু নিজ দলের সহ-সভাপতির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘উভয় প্রার্থী দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তারা মুজিবকোট পরে দলীয় পরিচয় দিয়েই ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন। এতে করে ভোটাররা বিভ্রান্ত হচ্ছেন এবং নৌকা প্রতীকের জন্য ক্ষতি হচ্ছে।’

সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম ফালুর বিষয়ে দল থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই চেয়ারম্যান প্রার্থী বলেন, ‘ গত ২২ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে জেলা কমিটির কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তাকেও বহিষ্কার করা উচিত বলে মনে করি।’