শিকার নিষেধাজ্ঞায় ইলিশের বিচরণ বেড়েছে

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সারা দেশের মতো কুড়িগ্রামের নদ-নদীতেও মাছ শিকারে নেমেছেন জেলেরা। গত ২২ দিনে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে ৭১টি অভিযানে প্রায় সাড়ে চার লাখ মিটার জাল জব্দ করেছে মৎস্য বিভাগের টহল দল। এ সময় ১২৭ কেজি ইলিশ উদ্ধার করা হয়, যা গত বছরের উদ্ধার করা ইলিশের পরিমাণের দ্বিগুণেরও বেশি। মৎস্য বিভাগ বলছে, এ বছর জেলার নদ-নদীতে ইলিশের বিচরণ গত বছরের চেয়েও বেশি ছিল। আর ইলিশের আকারও ছিল বড়।

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করে গত ৭ অক্টোবর থেকে দেশের নদ-নদীতে ইলিশসহ সবধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। নির্বিঘ্নে মা ইলিশকে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত দেশব্যাপী  ইলিশ আহরণ,বিপণন, পরিবহন, কেনাবেচা, বিনিময় ও মজুত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কুড়িগ্রামের ছয় উপজেলার (সদর, নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর) নদ-নদী ইলিশ জোনের আওতাভুক্ত। 
উপকূলীয় অঞ্চলে ইলিশ শিকার বন্ধ থাকলে তখন জেলার নদ-নদীতে কিছু ইলিশের দেখা মেলে। মাছ শিকার থেকে বিরত থাকতে জেলার তালিকাভুক্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার দুস্থ জেলেকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্য সহায়তা দিয়েছে সরকার।

মৎস্য বিভাগ জানায়, এ বছর ইলিশ শিকারের নিষিদ্ধ সময়ে কুড়িগ্রামের নদ নদীতে পরিচালিত অভিযানে চার লাখ ৫৬ হাজার ৪০০ মিটার ইলিশ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এসব জালের আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।

মৎস্য বিভাগ আরও জানায়, গত বছর ইলিশ শিকারের নিষিদ্ধ সময়ে পরিচালিত অভিযানে মাত্র ৫৪ কেজি মাছ উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর তা ১২৭ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধার করা ইলিশের আকারও গত বছরের তুলনায় বেশ বড়। উদ্ধার করা ইলিশগুলো বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।

জেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত সদরের যাত্রাপুর, উলিপুরের বেগমগঞ্জ ও হাতিয়া ইউনিয়নের ঘাট এবং চিলমারী উপজেলার মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি। আকারও বেশ বড়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ডিএফও) কালিপদ রায় বলেন, ‘এ বছর কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে ইলিশের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। ভাটির নদ-নদীতে ইলিশ শিকার বন্ধ হলে কুড়িগ্রামে ইলিশের পরিমাণ বাড়ে। এ ছাড়াও এ বছর নদীতে পানি প্রবাহ বেশি থাকায় ইলিশের পরিমাণ কিছুটা বেশি হয়েছে বলে মনে হয়।’

‘আমাদের অভিযানে উদ্ধার করা ইলিশের আকারগুলো বেশ বড় ছিল। বেশিরভাগের ওজন এক কেজি বা তার বেশি ছিল’, যোগ করেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।