শিমের দাম বেশি, কৃষকের মুখে হাসি

নীলফামারীতে আগাম শিমের ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা। পাইকারিতে শিমের কেজি ৫৫-৬০ বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। তবে এবার শিমের দাম বেশি বলছেন ক্রেতারা। যদিও চাষিরা বলছেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এবার দাম একটু বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, এবার জেলার ছয় উপজেলায় পাঁচ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ২৬৫ হেক্টর জমির ফসল উঠেছে। বাকিগুলোর আগামী দু’একমাসের মধ্যে উঠবে। গত বছর সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ হাজার ৫৮০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে ৯০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ বেশি হয়েছে।

চাষিরা বলছেন, শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। কয়েক বছর ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা। এরই মধ্যে আগাম শিম বাজারে উঠেছে। তাই দাম বেশি।

ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের চৌকিদারের মোড় এলাকার শিম চাষি আল আশাদ ইসলাম বলেন, ‘আমার ক্ষেতের শিম গাছে ফলন এসেছে। এখনও বিক্রি শুরু করিনি। কয়েকদিনের মধ্যে বিক্রি করবো।’

একই গ্রামের শিম চাষি আশাদ আলী বলেন, ‘১৮ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। খরচ হয়েছে তিন হাজার ৫০০ টাকা। এখন পর্যন্ত সাত হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। আশা করছি, আরও ১০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো। এবার রোগ বালাই কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছি।’

ডোমারে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে আগাম জাতের শিম

একই উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের চাষি আব্দুর রহিম বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। পাইকারিতে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। ফলন ভালো হওয়ায় খরচ বাদ দিয়ে লক্ষাধিক টাকার শিম বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।’

জেলা শহরের কিচেন মার্কেটের শাকসবজির খুচরা ব্যবসায়ী ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘বর্তমানে চাষিরা পাইকারিতে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে শিম বিক্রি করছেন। ওই শিম খুচরা বাজারে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি আমরা। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হচ্ছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনিছুজ্জামান বলেন, ‘ডোমার উপজেলার মাটি উর্বর। শিম চাষের উপযোগী হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। শিম চাষে ভালো ফলনের জন্য আমরা সার্বিকভাবে পরামর্শ দিচ্ছি চাষিদের। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন ফলন উঠতে শুরু করেছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়রা মন্ডল বলেন, ‘ডোমারের মাটি ও আবহাওয়া শিম চাষের উপযোগী। এই অঞ্চলের মাটি উর্বর হওয়ায় কম খরচে বেশি শাকসবজি উৎপাদন সম্ভব। চলতি মৌসুমে ডোমারে ৭৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি, এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’