রংপুরে বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

রংপুরে পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান লাকুর নাম উল্লেখ ৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা করে তিন পুলিশকে আহত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানার এসআই রফিকুল ইসলাম মামলাটি করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী।

মামলার প্রধান আসামি জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম দাবি করেছেন, সংঘর্ষের দিন মঙ্গলবার তিনি রংপুরেই ছিলেন না। তার অসুস্থ এক আত্মীয়ের ঢাকার একটি হাসপাতালে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালেই ছিলেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ-স্পেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত এক সভায় রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেছেন। ফলে তাকে মামলার প্রধান আসামি করে পুলিশের করা মামলাটি সাজানো।

তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে দাবি করেন, ঢাকায় যে দুটি কারণে অবস্থান করেছেন, এর ভিডিও ফুটেজ ছবিসহ অন্যান্য দালিলিক প্রমাণ তার কাছে আছে- যা আদালতে উপস্থাপন করবেন। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে, তারা প্রমাণ করুক আমি সংঘর্ষের ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলাম।

বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা বিএনপির উদ্যোগে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। এর আগে, বিকাল ৪টার দিকে নগরীর শাপলা চত্বর থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসার পথে পুলিশ বিনা উসকানিতে গ্র্যান্ড হোটেলের অদূরে মিছিলে হামলা চালিয়ে বেপরোয়া লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয়ের চেষ্টা করলে পুলিশ দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে লাঠিচার্জ করে। এতে কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হন।

এতে জেলা বিএনপি সদস্য আনিস মন্ডল, কাউনিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা রাশেদুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। এ ছাড়ায় পুলিশের লাঠি চার্জে রংপুর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রত্না বেগম, রংপুর জেলা তাঁতি দলের সদস্য সচিব নাজিউর রহমান, পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান প্রধানও গুরুতর আহত হন।

এই ঘটনায় বিএনপির ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তিন পুলিশ আহত হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। 

কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হোসেন আলী জানান, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন এসআই রফিকুল ইসলাম এবং মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসআই সোহেল রানাকে। ঘটনার তথ্য প্রমাণ পুলিশের  কাছে আছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান লাকু মামলাটি সাজানো বলে দাবি করেছেন। তারা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার এবং নেতাকর্মীদের হয়রানি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।