চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে জিয়াউর, সদরে ওদুদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মুহা. জিয়াউর রহমান। রবিবার (১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।

স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ছেড়ে দেওয়া এই আসনটিতে আসন্ন উপনির্বাচনে ডজন খানেকেরও বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী ছিলেন এবং নৌকার পক্ষে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন।

তবে মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিলেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। যদিও হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসা এবং তার মনোনয়ন পাওয়ার গুঞ্জন উঠলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ শুরু হয়। অবশেষে তৃণমূলের ত্যাগী নেতার হাতে নৌকা তুলে দেওয়ায় খুশি হয়েছেন নেতাকর্মীরা।  

নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, জিয়াউর রহমান দলের ত্যাগী নেতা। সব সময় নেতা-কর্মীদের বিপদে-আপদে পাশে ছিলেন। তাকে দল মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা খুশি। তাকে মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামী লীগ আবারও প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ তৃণমূলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের সব সময় মূল্যায়ন করে।

মনোনয়ন পাওয়ার পর মুহা. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘দল আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেওয়ায় দলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আশা করছি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এই উপনির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে আসনটি দলকে উপহার দেব।’

তিনি আরও বলেন, বিগত চার বছরে এ আসনটিতে বিএনপির এমপি কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি। উপনির্বাচনে বিজয়ী হলে সরকারের দেশব্যাপী উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা, তা অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে এবং এ আসনের পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে কাজ করবো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোলা-ভোলাহাট-গোমস্তাপুর) আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির আমিনুল ইসলাম ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। পরাজিত প্রার্থী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২ ভোট পান। এ আসনটি জামায়াত-বিএনপি প্রভাবিত এলাকা। গত ১১ ডিসেম্বর আমিনুল পদত্যাগ করার পর থেকে মাঠে নেমে পড়েন জিয়াউর রহমান। উপনির্বাচনে তিনি একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন।

জিয়াউর রহমান এর আগে নবম জাতীয় সংসদের এমপি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং রহনপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। বর্তমানে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। 

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনের উপনির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুবারের সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস। তার মনোনয়নের খবরে রাতে শহরের নিউমার্কেট এলাকায় আনন্দ র‌্যালি করেছে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ।

আব্দুল ওদুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর-৩ আসনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদের ছেড়ে দেওয়া আসনে নির্বাচন করবেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে হারুন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। পরাজিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস পেয়েছিলেন ৮৫ হাজার ৯৩৮ ভোট। ফলে হারুন ৪৭ হাজার ৭২৩ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে পরাজিত হলেও ওদুদ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই ছিলেন।

নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পর আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস বলেন, ‘বিজয়ী হলে যেসব কাজ আমার সময় করতে পারিনি, তা করার চেষ্টা করবো।’ তবে গতবার বিএনপির হারুনের কাছে পরাজয়ের বিষয়ে এই নেতা বলেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনে আমি পরাজিত হইনি। দলের ও প্রশাসনের কিছু সুবিধাভোগীর ষড়যন্ত্রের কারণে আমার পরাজয় হয়েছিল। আমি হারুনের কাছে হারিনি।’

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের একাদশতম নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনের দুটিতেই জয় পায় বিএনপি।