শঠিবাড়ি সরকারি খাদ্যগুদাম

গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের চাল কেনার অভিযোগ

রংপুরের মিঠাপুকুরের শঠিবাড়ি সরকারি খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে নিম্নমানের চাল কিনে তা সরকারি গুদামে সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে ওসব চাল সান্তাহার এলএসডি ফেরত পাঠানো হয়েছে। চাল ফেরত পাঠানোর পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

এদিকে, চলতি মৌসুমে কৃষকদের কাছ থেকে কোনও ধান কেনেনি শঠিবাড়ি সরকারি খাদ্যগুদাম। কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান নিয়ে গেলে বিভিন্ন অজুহাতে কেনেননি গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে পীরগাছা খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা থাকাকালে কৃষকের কাছ থেকে ধান না কিনে মিলারদের চাল কিনে ভুয়া কৃষকের নাম দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে আকলিমা বেগমের বিরুদ্ধে।

শঠিবাড়ি খাদ্যগুদামের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার মিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল দুই হাজার ৭৪০ মেট্রিক টন। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই হাজার ২৭ মেট্রিক টন ধান। কিন্তু গত তিন মাসে মিলারদের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ চার হাজার ৪৮৫ মেট্রিক টন চাল কিনেছেন গুদাম কর্মকর্তা। তবে তিন মাসে কৃষকদের কাছ থেকে দুই হাজার ২৭ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও কোনও ধান কেনা হয়নি।

কয়েকজন মিলার বলেছেন, পরিচিত মিলারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে কম দামে নিম্নমানের চাল কিনেছেন গুদাম কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগম যেসব নিম্নমানের চাল কিনেছেন, তা ধরা পড়ে সম্প্রতি। সান্তাহার এলএসডি গুদামে পাঠানো পাঁচ ট্রাক চাল ফেরত দেন সেখানকার দায়িত্বশীলরা। পরে চালগুলো ফেরত আনতে হয়। 

এ ব্যাপারে সান্তাহার এলএসডির ব্যবস্থাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘শঠিবাড়ি খাদ্যগুদাম থেকে পাঠানো চালে ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি থাকায় ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

পাঠানো চালের বস্তাগুলো পুরনো জানিয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা অমুল্য কুমার সরকার বলেন, ‘শঠিবাড়ি সরকারি খাদ্যগুদাম থেকে পাঠানো একটি চালের ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে চাল নিম্নমানের ছিল না। চালে ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি ছিল। এজন্য ফেরত দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, ‘শঠিবাড়ি খাদ্যগুদাম থেকে পাঠানো চালে ময়েশ্চারের পরিমাণ বেশি ছিল। এজন্য চালগুলো গ্রহণ না করে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’ 

কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শঠিবাড়ি খাদ্যগুদামের কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছেন, কৃষকরা ধান বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় ধান কিনতে পারেননি। তবু বিষয়টি আমরা দেখবো।’

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে শঠিবাড়ি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, ‘খাদ্যগুদামের কিছু কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। জেলা ও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তারা সান্তাহার এলএসডিতে অভিযোগ দেওয়ায় চালের ট্রাক ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে নিম্নমানের চাল কেনা হয়নি।’