প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর মূল সনদ পাচ্ছেন বেরোবির শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর পর মূল সনদ পেতে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আগামী সপ্তাহ থেকে মূল সনদ দেওয়া শুরু হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯টি ব্যাচের স্নাতকোত্তর এবং ১০টি ব্যাচে স্নাতক শেষ করেছেন প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী। তবে মূল সনদপত্র ছাড়াই ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে তাদের। অনেককে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সাময়িক সনদপত্র নিয়েই ক্যাম্পাস ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

তাদের পক্ষে বার বার মূল সনদ দেওয়ার দাবি উঠলেও আমলে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষার্থীদের মূল সনদ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। এরই মধ্যে মূল সনদ প্রদানের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

মূল সনদ প্রদানের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য বাইরের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমেই মূল সনদকে প্রাধান্য দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য বাইরে যেতে চান এবং সুযোগও আসে। কিন্তু এতদিন মূল সনদের অভাবে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। উচ্চশিক্ষা গ্রহণে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূল সনদ দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। মূল সনদ শুধু উচ্চশিক্ষা নয়, বরং বিভিন্ন চাকরির মৌখিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সহায়ক হবে বলে জানান তারা।

এ ব্যাপারে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশে যেতে আগ্রহী ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাশেম বাঁধন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মূল সনদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে আমাদের ক্যাম্পাসের বহু শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক বড় সংকটের সমাধান হবে। মূল সনদ নিয়ে আমিও অনেক চিন্তায় ছিলাম। এমন খবরে কিছুটা স্বস্তিবোধ বাধ করছি।’

জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এশা শারমিন হক বলেন, ‘ইতালির দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু মূল সনদের পরিবর্তে সাময়িক সনদ দেওয়ায় তারা আমার ভর্তিকে শর্তসাপেক্ষে ভর্তি হিসেবে যুক্ত করেছে। আমাকে ভিসা আবেদনের আগে মূল সনদ দিয়ে ভার্সিটি থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হতো যা এতদিন আমার জন্য অনেক বড় চিন্তার বিষয় ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের মূল সনদ দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। আমার মতো অনেকেই এই উদ্যোগের সুফল পাবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন বিষয়টি সমাধানের জন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যার কথা আমাকে জানিয়েছে। তাদের সুবিধার্থে আমি এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করছি মূল সনদ উচ্চশিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সহায়ক হবে।’