যে কারণে ভারতীয় ভিসা পেতে দেরি হচ্ছে, তার কারণ জানালেন সহকারী হাইকমিশনার

রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার বলেছেন, ‘ভারতীয় ভিসা পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে এখন নতুন পদ্ধতিতে আবেদন করতে হচ্ছে ভিসাপ্রার্থীদের। কাজেই নতুন পদ্ধতি কঠিন বলে মনে হচ্ছে অনেকের। এজন্য ভিসা পেতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে এবং সময় লাগছে।’

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর সোয়া ১টায় হিলি ডাকবাংলো চত্বরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এদিন দুপুরে রাজশাহী থেকে সড়কপথে হিলিতে এলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত রায় এবং হাকিমপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শরিফুল ইসলাম। এ সময় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়াম্যান শাহিনুর রেজা ও পৌর মেয়র জামিল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ভারতীয় ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে সময় কেন বেশি লাগছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সহকারী হাইকমিশনার বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ভারতের ভিসা পেতে সেন্টারগুলোতে দীর্ঘ লাইন লেগে থাকতো। ফলে বয়স্ক ও রোগীদের দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকতে হতো। এখন মুমূর্ষু রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ করে ক্যানসারের রোগীদের ক্ষেত্রে এক-দুই দিনের মধ্যে ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। অন্য রোগীদের ক্ষেত্রেও যদি কেউ গুরুত্বপূর্ণ কাগজগুলো জমা দেয়; তাহলে দ্রুত ভিসা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।’

বর্তমানে ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পদ্ধতি চালু করেছি জানিয়ে মনোজ কুমার আরও বলেন, ‘এখন ঘরে বসে ভিসাপ্রার্থীরা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেন। তারপর ভিসা সেন্টারের দেওয়া সময়মতো সেখানে যান। এরপর আবেদন করেন। তবে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, সময়ও বেশি লাগছে। কিছু সীমাবদ্ধতা তো রয়েছে আমাদের। আমরা কতগুলো ভিসা ইস্যু করতে পারবো, আবার জনবল সংকট আছে। সবকিছু মিলিয়ে ভিসা দিতে হয়। বিশেষ করে ক্যানসারের রোগীদের আবেদনের এক থেকে তিন দিনের মধ্যে ভিসা দেওয়া হয়। বাকি রোগীদের ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে দেওয়া হয়। তবে ট্যুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগছে। মূলত গুরুত্ব ও প্রয়োজনের ধরন অনুযায়ী ভিসা ইস্যু করা হয়। সবার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগের পদ্ধতি পরিবর্তন করে নতুন এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবে সবাই। তখন কারও কোনও সমস্যা হবে না।’

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সুদৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ জানিয়ে সহকারী হাইকমিশনার বলেন, ‘এই সম্পর্ক আরও উন্নত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের পণ্য আমদানি-রফতানি বাড়াতে ভারতের অভ্যন্তরে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কার্যক্রম চলছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ অংশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এসব কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। ’

এরপর হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেট এলাকা পরিদর্শনে যান সহকারী হাইকমিশনার। এ সময় সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। পরে সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়ে ভারতীয় কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখান থেকে ফিরে হিলি স্থলবন্দর পরিদর্শন করেন। এ সময় তাকে হিলি স্থলবন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বিকালে বন্দরের সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বৃদ্ধির বিষয়ে কথা বলেন। বৈঠক শেষে পরে হিলির চন্ডিপুরে সার্বজনীন মন্দিরে যান এবং সনাতন ধর্মালম্বীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। বিকালে সড়কপথে রাজশাহীতে রওনা হন সহকারী হাইকমিশনার।