হাত-পায়ের রগ কেটে যুবলীগ নেতাকে হত্যা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জাহিদুল ইসলাম নামের যুবলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার সময় তার সঙ্গে থাকা কবির মিয়াও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে

রবিবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এর আগে, রাত সাড়ে ১১টার দিকে বামনডাঙ্গা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের শাখামারা ব্রিজ এলাকায় হামলার শিকার হন।

নিহত জাহিদুল ইসলাম (৩৮) সোনারায় ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের পশ্চিম বৈদ্যনাথ গ্রামের আবুল হোসেন মেম্বারের ছেলে। এ ছাড়া আহত কবির মিয়া (৩৫) উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের বাচুয়াহাটি গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাতে বামনডাঙ্গা থেকে জাহিদুল ইসলাম ও কবির মিয়া মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে শাখা মারা ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ৭-৮ জন হঠাৎ রশি টেনে মোটরসাইকেল গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাহিদুলের দুই হাত ও দুই পায়ের রগ কেটে দেয় এবং মাথাসহ শরীরে একাধিক কোপ দেয়। এ ছাড়া লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয় তার সঙ্গে থাকা বাবাকে।

পরে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জাহিদুলকে দ্রুত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ভর্তির পর প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় রাতেই মারা যান।

হাসপাতালে নেওয়ার পর আহত জাহিদুল ইসলাম জানান, হামলাকারী ৭-৮ জন ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথা ও শরীরে কোপ দেয়। পরে তারা হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। হামলাকারীদের মধ্যে মুছা, সামু, ইমতিয়াজ ও খাদেমুলসহ কয়েকজনকে চিনতে পেরেছেন। তাদের সবাই স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কর্মী। হামলার ঘটনাটি পরিকল্পিত বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে, এ ঘটনার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে গোটা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের দায়ী করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবু বলেন, ঘটনাটি পরিকল্পিত। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা জাহিদুলের ওপর হামলা চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুল ইসলামকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তির পর পরই প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।