বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম। তিনি একাধারে উপজেলার হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) পদে কর্মরত। শুধু তাই নয়, তিনি ওই বিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে নিয়মিত বেতন (এমপিও) উত্তোলন করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারায় বলা হয়েছে, বিবাহিত, ব্যবসায়ী ও চাকরিতে নিয়োজিত কোনও ছাত্রছাত্রী ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাবেন না।

জেলা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে নজরুল ইসলামকে সভাপতি করে উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। নজরুল ইসলাম বিদ্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরিরত থাকলেও সেই তথ্য গোপন করে কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান। এক বছর মেয়াদি ওই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি নজরুলের নেতৃত্বাধীন আংশিক কমিটি। উপজেলায় তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমও স্থবির।

নজরুলের এমএলএসএস পদে কর্মরত থাকা ও এমপিও হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তার নিয়োগ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কোনও তথ্য দেননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। নজরুলের নিয়োগের বছর ও এমপিও কার্যকর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নজরুল ইসলাম ২০২২ সালে এমএলএসএস পদে নিয়োগ পান।

হাতিয়া ভবেশ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাইনবোর্ড

এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি কোনও উত্তর দিতে রাজি হননি। কিছু জানতে চাইলে তিনি তার সঙ্গে বসে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান।

নজরুল বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি এখন ব্যস্ত আছি। আপনার চায়ের দাওয়াত থাকলো। কিছু জানার থাকলে উলিপুরে এসে চা খেতে খেতে কথা বলা যাবে।’

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চাকরিরত থেকে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি সংযোগ কেটে দেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুর রশিদ নোমান বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সভাপতির বিরুদ্ধে চাকরিরত থাকার অভিযোগ শুনেছিলাম। তবে আমি নিশ্চিত নই। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলা হয়নি।’

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘চাকরিরত কেউ ছাত্রলীগ করতে পারে না। এটা গঠনতন্ত্রবিরোধী। নজরুলের বিষয়টি আমার জানা নেই। চাকরিরত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম উলিপুরের ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আফজাল হোসেন। নজরুল কুড়িগ্রাম জেলা শহরের মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছেন বলে ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে।