কু‌ড়িগ্রা‌মের দুর্গাপুর উচ্চ বিদ‌্যালয়

সেই প্রধান শিক্ষ‌কের বিরু‌দ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে, ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রবেশপত্র বিতরণ ও স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) শামসুল আলম। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) বরাবর লিখিত সুপারিশ করেছেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তা শামসুল আলম নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে স্কুল পরিচালনায় প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের অনিয়ম নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হলেও কোনও প্রতিবেদনই আলোর মুখ দেখেনি।

ডিইও শামসুল আলম জানান, প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণে পরীক্ষার্থীদের কাছে টাকা গ্রহণ ও স্কুল মাঠে নিয়মিত পশুর হাট বসানো নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এক পর্যায়ে এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় মাউশি। কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা শেষে ওই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে টাকার বিনিময়ে প্রবেশপত্র বিতরণের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষক পরে টাকা ফেরত দিয়েছেন। একই তথ্য জানিয়েছেন ওই স্কুলের অফিস সহকারী।

ডিইও আরও জানান, তদন্তে স্কুল মাঠে নিয়মিত পশুর হাট বসানোর অভিযোগেরও সত্যতা মিলেছে। প্রধান শিক্ষক একদিকে পশুর হাট সরানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন, অন্যদিকে এক লক্ষ টাকা নিয়ে হাট বসাতে সম্মতি দিয়েছেন। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার লঙ্ঘন। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য লিখিত আকারে মাউশি বরাবর পাঠানো হয়েছে।

ডিইও বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক না চাইলে স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানোর এখতিয়ার কারও নেই। নির্দেশনা অমান্য করে প্রবেশপত্র বিতরণে টাকা গ্রহণ ও স্কুল মাঠে পশুর হাট বসানোর অভিযোগে প্রধান শিক্ষক উৎপল কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে মাউশিতে সুপারিশ পাঠিয়েছি।’

এর আগেও এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দ এবং বাণিজ্যিক ঘরের ভাড়াসহ বিদ্যালয় নিজস্ব আয়ের প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে এসব অভিযোগের সত্যতা পায় উপজেলা প্রশাসন।

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে মাউশি’র মহাপরিচালক বরাবর প্রতিবেদন পাঠান কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। ২০২০ সালে পাঠানো ওই প্রতিবেদন গত চার বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। ‘রহস্যজনক’ কারণে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়নি মাউশি কিংবা মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন:

সেই প্রধান শিক্ষ‌কের বিরু‌দ্ধে তদ‌ন্তের নি‌র্দেশ মাউ‌শির