দম্প‌তি‌কে হয়রা‌নির অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতি‌নিধি গ্রেফতার

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় ঈ‌দের রা‌তে দম্প‌তি‌কে বহনকারী অ‌টো‌রিকশা আটকে হয়রা‌নির অ‌ভি‌যো‌গে মে‌হেদী হাসান (২২) না‌মে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক ছাত্র প্রতি‌নি‌ধি‌কে গ্রেফতার ক‌রে‌ছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১ এ‌প্রিল) দুপু‌রে তা‌কে ‌গ্রেফতার ক‌রে আদাল‌তের মাধ্যমে কারাগা‌রে পাঠা‌নো হ‌য়।

এ ঘটনায় ভুক্ত‌ভোগী গৃহবধূর বাবা বাদী হ‌য়ে চার জ‌নের নাম উ‌ল্লেখ ক‌রে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জন‌কে আসা‌মি ক‌রে শ্লীলতাহানি ও অপহরণ চেষ্টার অ‌ভি‌যো‌গে মামলা ক‌রে‌ছেন। রা‌জিবপুর থানার উপপ‌রিদর্শক (এসআই) আ‌তিকুজ্জামান আ‌তিক এসব তথ্য বাংলা ট্রিবিউনকে নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

গ্রেফতার মে‌হেদী হাসান সদর ইউনিয়নের মরিচাকান্দী এলাকার মিস্টার আলমের ছেলে। তার মা শা‌হিদা বেগম সদর ইউ‌নিয়‌নের সংর‌ক্ষিত নারী ইউ‌পি সদস্য। ভুক্ত‌ভোগী গৃহবধূর স্বামী কু‌ড়িগ্রাম জেলায় কর্মরত এক সরকা‌রি কর্মকর্তার ছে‌লে ব‌লে জানা গে‌ছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গে‌ছে, ঈ‌দের দিন রা‌তে রা‌জিবপু‌র সদ‌রে শ্বশুরবা‌ড়ি‌তে দাওয়াত খাওয়া শে‌ষে স্ত্রী ও ভাই-বোন‌কে নি‌য়ে রৌমারী‌র নিজ বা‌ড়িতে ফির‌ছি‌লেন ওই সরকা‌রি কর্মকর্তার ছে‌লে। এ সময় মরিচাকান্দী এলাকায় পৌঁছা‌লে মে‌হেদী ও তার সঙ্গীরা দম্প‌তি‌কে বহনকারী অ‌টো‌রিকশার গতিরোধ করেন। অ‌টো‌রিকশায় থাকা গৃহবধূ‌কে পা‌লি‌য়ে নি‌য়ে যাওয়ার অ‌ভি‌যোগ তু‌লে মে‌হেদী ও তার সঙ্গীরা তা‌দের আট‌কে রাখার চেষ্টা ক‌রেন। এ নিয়ে উভয় প‌ক্ষের বাগ‌বিতণ্ডা ও ধস্তাধ‌স্তি হয়। প‌রে স্থানীয়রাসহ দম্প‌তির সঙ্গে দাওয়া‌তে যাওয়া প‌রিবা‌রের লোকজন ঘটনাস্থ‌লে পৌঁছা‌লে মে‌হেদীসহ অ‌ভিযুক্তরা পা‌লিয়ে যান। এ ঘটনায় ভুক্ত‌ভোগী দম্প‌তির কেউ বাদী হ‌য়ে মামলা ক‌রেন‌নি। তবে গৃহবধূর বাবা মঙ্গলবার রা‌জিবপুর থানায় মামলা ক‌রেন।

ওই সরকা‌রি কর্মকর্তার ছে‌লে স্থানীয় সাংবা‌দিক‌দের ব‌লেন, ওই যুবকরা নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে আমার স্ত্রী ও চাচাতো বোনের শ্লীলতাহানির চেষ্টা ক‌রেছেন। একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে আমাদের আরও একটি ইজিবাইক আসলে তারা পালিয়ে যান।

এ ব্যাপা‌রে ওই সরকা‌রি কর্মকর্তা‌কে ফোন দি‌লে তি‌নি ব্যস্ত আ‌ছেন জা‌নি‌য়ে কল কে‌টে দেন। ফ‌লে তার বক্তব্য পাওয়া যায়‌নি।

এ বিষয়ে রা‌জিবপুর উপ‌জেলার বা‌সিন্দা ও বৈষম্যবি‌রোধী ছাত্র আ‌ন্দোলনের কু‌ড়িগ্রাম জেলা শাখার সংগঠক র‌বিউল ইসলাম র‌বিন বাংলা ট্রিবিউনকে ব‌লেন, ‘মে‌হেদী সমন্বয়ক নন। তি‌নি ছাত্র প্রতি‌নি‌ধি। দম্প‌তির রিকশা আট‌কে ঠিক ক‌রেন‌নি তিনি। ত‌বে যে অ‌ভি‌যোগে মামলা হ‌য়ে‌ছে, তা স‌ঠিক নয়। ছোট বিষয়‌টিকে বড় ক‌রে দেখা‌নোর চেষ্টা করা হ‌য়ে‌ছে। অপহরণ কিংবা শ্লীলতাহানির চেষ্টার অ‌ভি‌যোগ আমার কা‌ছে অ‌যৌ‌ক্তিক ম‌নে হ‌য়ে‌ছে। তিল‌কে তাল করা হয়ে‌ছে মামলায়। বিষয়‌টি আমা‌দের জানা‌লে আমরা সমাধান কর‌তে পারতাম। কিন্তু কোনও তদন্ত ছাড়াই পু‌লিশ মামলা রেকর্ড ক‌রে মে‌হেদী‌কে গ্রেফতার ক‌রে‌ কারাগারে পাঠিয়েছে।’

এসআই আ‌তিকুজ্জামান আ‌তিক বাংলা ট্রিবিউনকে ব‌লেন, ‘শ্লীলতাহানি ও অপহরণ চেষ্টার অ‌ভি‌যো‌গে মামলা হ‌য়ে‌ছে। আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতা‌রে অভিযান অব্যাহত আছে।’