বিরোধ মীমাংসার পরই হামলা, গাইবান্ধায় ছাত্রদল-কৃষক দলের নেতাসহ আহত ৭

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দুই পক্ষের বিরোধ মীমাংসার পরপরই ছাত্রদল ও কৃষক দল নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) রবিউল ইসলাম খাজা ও তার ছেলে অনিকের বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ উঠেছে। হামলার ঘটনায় কৃষক দল ও ছাত্রদলের ৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (৭ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের তারার মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহাব উদ্দীন রাফেল (৩৬), মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্যসচিব ইসমাইল ইসলাম (২৮) ও জাকির হোসেন (৪৮), সোহেল রানা (২৫), রাজু মিয়া (৫২), বাবু মণ্ডল (২৬), বুলবুল আহমেদ (৪০)। তাদের সবার বাড়ি মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম খাজার ছেলে অনিকের সঙ্গে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্যসচিব ইসমাইল হোসেনের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে কৃষক দল নেতা সাহাব উদ্দীন রাফেলসহ স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দিলে অনিক সেখান থেকে চলে যান। এর কিছু সময় পর অনিক ও তার বাবা লোকজন লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাফেলদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় সাত জন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের মধ্যে চার জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কৃষক দল নেতা সাহাব উদ্দীন রাফেল বলেন, ‘ঈদের দিন ভোরে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি মহিমাগঞ্জে আসি। সন্ধ্যায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বাজারে চা খেতে খেতে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় সাবেক ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম খাজার ছেলে অনিক এসে জানায়, তার বাবার সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ইসমাইল হোসেন খারাপ আচরণ করেছেন। এ সময় উভয়ের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর অনিক তার বাবা রবিউল ইসলাম খাজাসহ আরো কিছু লোকজনকে নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি হাসপাতাল থেকে ফিরে মামলা করবো।’

অপর আহত মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্যসচিব ইসমাইল ইসলাম বলেন, ‘অনিকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয়ভাবে বসে সমাধান হয়। কিন্তু তারপরেও আমাদের উপর হামলা করে অনিক। হামলার সময় একজন আত্মরক্ষায় দোকানে ঢুকলেও পরে তাকে বের করা বেধড়ক পেটানো হয়। লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অনিকের সঙ্গে তার লোকজন কীভাবে হামলা করেছে তার দৃশ্য সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে। হামলার ঘটনায় আহতদের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম খাজা ও তার ছেলে অনিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘হামলার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’