সুনামগঞ্জের হাওরে মাছ পাচ্ছেন না জেলেরা

হাওরসুনামগঞ্জে অকাল বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রশাসনের দেওয়া সাত দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মঙ্গলবার সারাদিন হাওরে জাল ফেলে কাঙ্ক্ষিত মাছ পাননি জেলেরা। তাই জাল-দড়ি, নৌকা ফেলে এখন বিকল্প কর্মসংস্থান খুঁজছেন তারা।

হাওরে মাছ ধরতে আসা জেলেরা জানান, হাওরে মাছের মড়ক দেখা দেওয়ার পর অস্বাভাবিকভাবে মাছের পরিমাণ কমে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার লক্ষণশ্রী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের রমজান আলী বলেন, মাছের মড়ক দেখা দেওয়ার আগেও হাওরে মাছ মিলতো। এখন সারাদিন জাল ফেলে দুইশ টাকার মাছও ধরতে পারেন না তারা।

সোলেমান মিয়া বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে হাওরে মাছ ধরা শুরু হলেও তারা কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরতে পারছেন না।

গোবিনপুর গ্রামের মোশাহিদ মিয়া বলেন, ‘আগে নতুন পানির সঙ্গে হাওরের মাছের উজান (উজ্জামারা) দিতো। এখন আর সে অবস্থা নেই।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শঙ্কর রঞ্জন দাস বলেন, মাছের মড়কের সময় জেলায় ৫০ মেট্রিকটন মাছ মারা গেছে। এগুলোর প্রভাবে এমন হচ্ছে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার কালীপুর গ্রামের নুরুনবী বলেন, হাওরে গিয়ে জেলেরা এখন নিজেদের  খাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মাছ ধরতে পারছেন না, বিক্রি করবেন কিভাবে?

বাংলাদেশ ফিসারি রিসার্স ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাসুদ হোসেন খান বলেন, হাওরে পানি বেশি। এছাড়া পচা ধান গাছের কারণে জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না, মাছ লুকিয়ে যাচ্ছে। মাছ না পাওয়ার পেছনে জেলেদের যুক্তির জবাবে তিনি আরও বলেন,‘হাওরের মড়কে কি সব মাছ মারা গেছে? সব মাছ তো মারা যায়নি। পানি কমলে জেলেরা আরও বেশি মাছ ধরতে পারবে।’

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মো. জাহেদুল হক জানান, আজ  পর্যন্ত দেড় লাখ হেক্টর জমির ধান হাওরের পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি কমার পর আগামী কয়েকদিনে মধ্যে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনসাধারণের জন্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। দুর্গতদের মধ্যে শীঘ্রই দেড় লাখ  ভিজিএফ বিতরণের কাজ শুরু হবে।

/বিএল/

আরও পড়ুন:
উজানের ঢলে ভেসে গেছে কৃষকের স্বপ্ন, এখন শুধুই হাহাকার