হাকালুকি হাওরের ফসল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের স্মারকলিপি

তলিয়ে গেছে ধানঅতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগাম ফসল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে স্মারকলিপি প্রদান করেছে কৃষক সমিতি ও ক্ষেতমজুর সমিতি।

২৪ এপ্রিল (সোমবার) দুপুরে হাওরের ফসল রক্ষাসহ বিভিন্ন দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী গোলাম রাব্বির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে কুলাউড়া কৃষক সমিতি ও ক্ষেতমজুর সমিতি। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের আয়তন প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর। এটি দেশের বৃহত্তম হাওর। কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা ছাড়াও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকায় হাওরটি বিস্তৃত।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, এ বছর মার্চ মাসের শেষ দিকে টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শুধু হাকালুকি হাওরের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা অংশের প্রায় ৯৫ কোটি টাকার কাঁচা ও আধা পাকা বোরো ধানের ক্ষতি হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ২৬ হাজার কৃষক। এর আগে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসের দিকে একইভাবে আগাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের বোরো ধান তলিয়ে গিয়েছিল। তখন হাওরের বিভিন্ন এলাকা প্রায় ছয় মাস জলাবদ্ধ ছিল। কিন্তু হাওরের ফসল রক্ষায় কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

কৃষক সমিতি ও ক্ষেতমজুর সমিতি কুলাউড়া উপজেলা কমিটির দেওয়া স্মারকলিপিতে হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা, ফসল রক্ষায় পলিতে ভরাট হয়ে পড়া নদ-নদী ও খাল পুনঃখনন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং হাওরের বিল (জলমহাল) ইজারাপ্রথা বাতিলসহ ১০ দফা দাবি জানানো হয়।

ক্ষেতমজুর সমিতির কুলাউড়া উপজেলা কমিটির সভাপতি সৈয়দ মোশারফ আলী বলেন, ‘হাকালুকি হাওরে কোটি কোটি টাকার বোরো ধান উৎপাদিত হয়। আগাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে হাওরের ফসল নষ্ট হয়। কৃষকদের সর্বনাশ ঘটে। অথচ এ হাওরের বোরো ধানসহ অন্যান্য ফসল রক্ষায় সরকারিভাবে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। হাওরপারের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছি।’

মৌলভীবাজারের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, হাওরে জমে থাকা পানি দ্রুত সরানোর জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা যায় কি না, সে ব্যাপারে পাউবোর কর্মকর্তাদের তারা পরামর্শ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী  বলেন, হাকালুকি হাওরের ফসল রক্ষার ব্যাপারে তাদের কোনও কার্যক্রম নেই। তবে এবার হাওরের ফসলহানির পর ফসল রক্ষার ব্যাপারে তারা সম্প্রতি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত পরিকল্পনা জমা দিয়েছেন।

/এসএ/