বড়লেখায় টিলাধসে ১০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

মৌলভীবাজারঅতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বোবারতল এলাকায় টিলাধসে দুটি পাহাড়ি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পানপুঞ্জির খাসিয়া গ্রামসহ ১০ গ্রামের প্রায় ১০/১২ হাজার মানুষ। রাস্তা দুটির ৬০টি স্থানে গাছপালাসহ টিলার মাটি ধসে পড়েছে।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতিবৃষ্টি, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে শনিবার রাতে (১৭ জুন) দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের ছোটলেখা বাজার-বোবারতল ১১ নম্বর সড়ক এবং উত্তর ডিমাই-অরতকি সড়কের ওপর গাছপালাসহ টিলার মাটি ধসে পড়ে। এলাকার অরতকি, গগনটিলা, দক্ষিণ গান্ধাই, মধ্য গান্ধাই, পশ্চিম গান্ধাই, বোবারতলসহ অন্তত ৬০টি স্থানে মাটি ধসে পড়েছে। এই সড়ক দুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পাহাড়ি সড়ক দুটিতে জিপ গাড়িই সড়কে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। স্থানীয় লোকজন পাহাড় ডিঙিয়ে চলাচল করছে। এলাকার লোকজনের অন্যতম আয়ের উৎস হচ্ছে কাঁঠাল, লেবু, জারা লেবু, কলা ও পান। জিপ চলাচল করতে না পারায় এসব পণ্য বড়লেখা উপজেলা সদরসহ হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকরা। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। গ্রামগুলো থেকে ছোটলেখা বাজার ও উত্তর ডিমাই এলাকার দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। বড়লেখা উপজেলা সদরের সঙ্গে গ্রামের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। এলাকার মধ্য গান্ধাই, দক্ষিণ গান্ধাই, পশ্চিম গান্ধাই, টেপুছড়া, মধ্য টেপুছড়া, ইসলামপুর, ষাইটঘরি, উত্তর ষাইটঘরি, করইছড়া এবং গান্ধাই পানপুঞ্জি সড়ক যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দুর্গম এই গ্রামগুলোয় খাসিয়াসহ প্রায় ১০/১২ হাজার মানুষ বাস করে।

দক্ষিণ গান্ধাই গ্রামের ফখর উদ্দিন বলেন, জিপ গাড়ি দিয়া আমরা পণ্য আনা-নেওয়া করি। কিন্তু এখন রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনও কিছু আনা-নেওয়া যাচ্ছে না।

দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন বলেন, এলাকায় ঢোকার দুটো রাস্তাই বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তার ওপর শুধু মাটি না, সঙ্গে গাছপালাও ভেঙে পড়েছে। আমি হুইপ (শাহাব উদ্দিন) ও ইউএনওকে জানিয়েছি।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খাড়া পাহাড়ের ভেতর দিয়ে রাস্তা। খুবই দুর্গম এলাকা। এই রাস্তা মূলত হাঁটার জন্য তৈরি। শুধু চান্দের গাড়ি (জিপ) চলে। এখন যে অবস্থা আর কোনও গাড়ি ঢুকবে না। তিনি আরও বলেন, এই রাস্তা করার জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্প হচ্ছে।

/বিএল/