হামলার নেপথ্যে ফয়জুলের চাচা!

ফয়জুর ওরফে ফয়জুল (ফাইল ছবি)আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে লেখক ও অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে হামলাকারী ফয়জুর রহমান ওরফে ফয়জুল। হত্যার উদ্দেশ্য নিয়েই হামলা চালিয়েছিল বলে স্বীকার করেছে সে। সে জানিয়েছে, কুয়েত প্রবাসী চাচা আব্দুল জাহার বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে উগ্র মতাদর্শের দিকে নিয়ে যায় তাকে। জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়াসহ হামলার পরিকল্পনার খুঁটিনাটি তথ্যও জানিয়েছে ফয়জুল।

ফয়জুলের জবানবন্দির বরাত দিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) আব্দুল ওয়াহাব বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, কুয়েত প্রবাসী চাচা আব্দুল জাহার বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে উগ্র মতাদর্শের দিকে নিয়ে যায় ভাতিজা ফয়জুলকে। চাচার দেওয়া ল্যাপটপেই ইউটিউবে নিয়মিত উগ্রপন্থী ওয়াজ শুনতো ফয়জুল। জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে কয়েকজনের পরামর্শে সে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়। রবিবার (১৮ মার্চ) বিকালে সিলেট মহানগর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতের বিচারক হরিদাস কুমারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানায় ফয়জুল। জাফর ইকবালকে হত্যাচেষ্টায় আরও কয়েকজন জড়িত বলেও আদালতকে জানিয়েছে সে।

জবানবন্দিতে ফয়জুল আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী সে জাফর ইকবালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তবে তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ নেই বলে পুলিশের দীর্ঘ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। 

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) আব্দুল ওয়াহাব আরও জানান, ফয়জুল আদালতকে জানিয়েছে, জাফর ইকবালের লেখা ‘ভূতের বাচ্চা সুলায়মান’ নামের একটি বই পড়ে সে ক্ষিপ্ত হয়। হামলার সময় সে একাই ছিল বলে আদালতে জানায়। জিন্দাবাজারের রাজা ম্যানশনের কম্পিউটারের দোকানে চাকরি করার সময় তাকে পরিচিত একজন জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট ও জঙ্গিবাদের কয়েকটি ওয়াজসহ একটি মেমোরি কার্ড দেয়। জবানবন্দিতে মেমোরি কার্ড দেওয়া ব্যক্তির নামও বলেছে ফয়জুল।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে ফয়জুল জানিয়েছে, জাফর ইকবালের ওপর হামলা করার জন্য তার মামাসহ আরও কয়েকজন নানাভাবে উৎসাহিত করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে যারা উৎসাহিত করেছে তাদের কয়েকজনের নাম আদালতকে জানিয়েছে ফয়জুল। হামলার পর জাফর ইকবাল সম্পর্কে তার ধারণা পাল্টে গেলে সে এ ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়। নিজের ভুল বুঝতে পেরে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, ফয়জুলের সঙ্গে অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায়নি। তার কুয়েত প্রবাসী চাচাই মূলত তাকে জঙ্গিবাদে জড়াতে উৎসাহিত করেন।