রাবেয়া বেগমের স্মৃতি এখনও তাড়া করে ফেরে নানু মিয়াকে

কামরু মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া বেগম

২০১৭ সালের আজকের এই দিনে লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে লাগা আগুনে পুড়ে মারা যান রাবেয়া বেগম, তার স্বামী কমরু মিয়া ও ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য। ঘটনা এক বছরের আগের হলেও বোন রাবেয়া বেগমের স্মৃতি এখনও তাড়া করে ফেরে তার ভাই নানু মিয়াকে।

গ্রেনফেলের আগুনে নিহত রাবেয়া বেগমের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা মেদনিমহল গ্রামে। প্রধান পাকা সড়ক থেকে বসতবাড়ি কিছুটা ভেতরে। বাড়িতে ঢুকেই দেখা হয় রাবেয়া বেগমের ছোট ভাই নানু মিয়ার সঙ্গে।

নানু মিয়া (৬০) বলেন, ‘২০১৬ সালে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দেশে আসেন আমার বোন। প্রতি দুবছর পরপর তিনি দেশে আসতেন। কখনও স্বামীর সঙ্গে আবার কখও ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসতেন। আমার বোন রাবেয়া বলতেন— সাতকরা দিয়ে হাওরের ছোট মাছ রান্না তার খুব পছন্দের। সে যেভাবে বলতেন, সেইভাবে রান্না করে খাওয়াইতাম। আর ভাগ্নে-ভাগ্নি আসলে তারা শুধু দেশি মুরগির মাংস আর সফট ড্রিংকস খেতো।’ বোন রাবেয়া ধর্মানুরাগী ছিলেন বলেও জানান নানু মিয়া।

রাবেয়া বেগমের ভাই নানু মিয়া

তিনি আরও বলেন, ‘আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার তিন দিন আগে রাত্র ৯টার দিকে আমার বোনের জামাই ও বোন ফোন করেছিলেন। ফোনে তারা বলেন,“ভাগ্নি তানিমার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয়েছে। দাওয়াত দেবো, লন্ডন আসতে হবে।” আমি বলি, ‘আপনারা যদি আমাকে নেন তাহলে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডন যেতে পারি। আর না নিলে আমি দোয়া করবো। পরে তাদের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়িতে দোয়া মাহফিল করেছি।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে ৬০ বছর বয়সী নানু মিয়ার।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১৪ জুন লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। এতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কমরু মিয়াসহ তার পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহত হন।পরিবারের নিহত অন্য সদস্যরা হলেন– কমরু মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী রাবেয়া বেগম, ছেলে আব্দুল হামিদ (৩২), আব্দুল হানিফ (২৫) ও মেয়ে হুসনা আক্তার তানিমা (২০)। তবে আগুনের সময় গ্রেনফেল টাওয়ারে না থাকায় বেঁচে যান তাদের বড় ছেলে আব্দুল হাকিম (৩৫)।