কুলাউড়ায় অনুমতি ছাড়া টিলা থেকে শতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ

মৌলভীবাজারে অনুমতি ছাড়া গাছ হয়েছে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মনছড়া এলাকায় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া টিলা থেকে গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি বিরোধপূর্ণ জমি থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা নানা প্রজাতির শতাধিক গাছ কেটেছে বলে জানা যায়। কুলাউড়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মানিক রঞ্জন দে এতথ্য জানান ।

কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় বন অফিস। পরে বন বিভাগের লোকজন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাটা গাছগুলো জব্দ করেছে। ওই দিন সেখান থেকে ২০ খণ্ড কাটা গাছ জব্দ করা হয়। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারী) একই স্থান থেকে আরও ৯০ খণ্ড কাটা গাছ জব্দ করা হয়।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মনছড়া মৌজার (জেএল নম্বর-১০৯) মনছড়া এলাকার ৫৯ নম্বর দাগে ২৯০ একর সরকারি টিলা রয়েছে। ১৯৬০ সালে ওই জমি সরকার বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে। ওই জমির ২৯ দশমিক ৫০ একর জায়গার মালিকানা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে পাশে জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শফিক আহমদের সঙ্গে সরকারের বিরোধ চলছিল।

সম্প্রতি আদালতের মাধ্যমে শফিক আহমদ জমির মালিকানা পান। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে এখনো জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। জমির নামজারিও করা হয়নি। এ অবস্থায় শফিক বিরোধপূর্ণ জমির বিভিন্ন প্রজাতির ৭০০ গাছ মাত্র ১১ লাখ টাকায় কুলাউড়ার সদর ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকার বাসিন্দা আবুল খায়ের খানের কাছে বিক্রি করেন। খায়ের তার লোকজনকে দিয়ে ৬ ও ৭ ফেব্রুয়ারি শতাধিক গাছ কাটেন।

পরে স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে বন বিভাগের কুলাউড়া রেঞ্জের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাটা গাছগুলো এলোপাতাড়ি অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ ঘটনায় কুলাউড়া রেঞ্জের মনছড়া বিটের ফরেস্টার খায়রুল ইসলাম বাদী হয়ে আবুল খায়ের খান ও তার আত্মীয় একই এলাকার বাসিন্দা তোহা মিয়াসহ গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত পাঁচ শ্রমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন। এরপর বন বিভাগের লোকজন পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে গাছের খণ্ডাংশগুলো জব্দ করেন।

কুলাউড়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মানিক রঞ্জন দে বলেন, ‘যে কোনও জমি থেকে গাছ কাটতে হলে প্রশাসন ও বন বিভাগের সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিতে হয়। এক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। অবৈধভাবে গাছ কাটা হয়েছে।’

অভিযোগ সম্পর্কে আবুল খায়ের খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাছ কাটার অনুমতি না থাকায় গাছগুলো জব্দ করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে গোয়ালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শফিক আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘সরকারি জায়গা থেকে গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে গাছে খণ্ডাংশগুলো জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’