বিচারের রায় মানতে না পারলেও মাথা পেতে নিতে হবে: পরিকল্পনামন্ত্রী

সুনামগঞ্জ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা উদ্ভোধনের সময় বক্তব্য রাখছেন পরিকল্পনামন্ত্রীপরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, খালেদা জিয়ার জামিন আদালতের বিষয়, আদালতেই এর ফয়সালা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এতিমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সেই মামলার রায়ে তিনি সাজা ভোগ করছেন। মামলার রায় মানতে না পারলেও সহ্য করতে হবে, মাথা পেতে নিতে হবে। আদালতের এজলাসে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ কোনও সভ্য দেশে হতে পারে না, আর বাংলাদেশে তো মোটেও না। সবাই আদালতের রায় মানতে বাধ্য। কিন্তু বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীরাও এজলাস এলাকায় মিছিল করে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।’

বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সুনামগঞ্জ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলা ২০১৯-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্থানীয় উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুনামগঞ্জের গভীর হাওর এলাকায় ৫শ’ কোটি টাকায় ১৮ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। উড়াল সড়কের মাধ্যমে জেলা সদরের সঙ্গে ধর্মপাশা উপজেলার সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা করা হবে। ছাতক থেকে রেললাইন সুনামগঞ্জ সদরে নিয়ে আসা হবে। আমরা প্রতিটি গ্রামের সড়কে বাতি লাগিয়ে গ্রামগুলোকে আলোকিত করবো। উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না, করলে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। সুনামগঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ অনেক স্থাপনা নির্মাণ করা হবে।’

উন্নয়নের বিরোধিতা করে কিছু করতে পারবেন না, বিএনপির উদ্দেশে এ মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, গেল ১০ বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সাগরের নিচ দিয়ে কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর মতো আরও সেতু হবে। হাওরের মানুষের স্বার্থেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করতে হবে। গ্রামের মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি সুনামগঞ্জ হাওর এলাকায় হবে। শাল্লা, ছাতক, ধর্মপাশা ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জেও এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, একটাই কথা কোনও অন্যায় কাজ করা যাবে না। ঢাকায় যারা নয়-ছয় করেছিল তাদের কী অবস্থা হয়েছে জনগণ দেখেছেন। সুনামগঞ্জে বাউল গান হবে, সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা হবে। সামাজিক ও জাতীয়ভাবে কোনও অন্যায় কাজ করা যাবে না। মেলায় শিশু ও নারীদের জন্য সুন্দর পরিবেশ রাখতে হবে। কেউ কেউ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন আমি নাকি সবকিছু আমার উপজেলা দক্ষিণ সুনামগঞ্জে নিয়ে যাচ্ছি। কী নিয়েছি তা তাদের বলতে হবে।’

চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিসের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিছবাহ। উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পৌর মেয়র নাদের বখত, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক জিয়াউল হক প্রমুখ।

মেলায় দেশি পণ্যসামগ্রী নিয়ে ৮০টি স্টল বসেছে। এছাড়াও শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে।