বাউল রণেশ ঠাকুরের পুড়িয়ে দেওয়া গানের ঘর পরিদর্শনে ইউএনও

পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া ঘরে রণেশ ঠাকুরসুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের অন্যতম শিষ্য বাউল রণেশ ঠাকুরের পুড়িয়ে দেওয়া গানের আসর ঘর পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দিরাই পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার (১৯ মে) উজালধল গ্রামে রণেশ ঠাকুরের বাড়ি পরিদর্শন করেন তারা।
গত ররিবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা রণেশ ঠাকুরের গানের ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এতে বাউল গানে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র ঢোল, বেহালা, দোতারা, একতারা, খঞ্জনি, মন্দিরা, হারমোনিয়ামসহ বেশ কিছু দেশীয় বাদ্যযন্ত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বাউল রণেশ ঠাকুর বলেন, রবিবার দিনগত রাতে তারা অন্যান্য দিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে আগুনের শিখা দেখে তাদের ঘুম ভাঙে। আগুনে তাদের বাউল গান চর্চার ঘরটি পুড়ে যায়। পরে প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
রণেশ ঠাকুরের স্ত্রী প্রণতি চক্রবর্তী বলেন, দূরের ভক্তদের বাউল গান শেখানোর জন্য ১০ বছরর আগে তারা ঘরটি নির্মাণ করেন। গান শেখানোর জন্য সেখানে একতারা, দোতারা, ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি বেহালাসহ বিভিন্ন দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ছিল। এছাড়া বাউল গানের পুরনো বইখাতাও ঘরে সংরক্ষিত ছিল। আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে এখন আর গান শেখানোর কোনও ব্যবস্থা নেই।
জানা গেছে, উজান ধলের রবনী মোহন চক্রবর্তী কীর্ত্তনীয়া ছিলেন। তার ছেলে রুহী ঠাকুর ও রণেশ ঠাকুর বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের অন্যতম শিষ্য। শাহ্ আব্দুল করিম ও রুহী ঠাকুর মারা যাবার পর ভাটি অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে যে কজন বাউল জনপ্রিয় তাদের অন্যতম রণেশ ঠাকুর। বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের বাড়ি’র লাগোয়া রণেশ ঠাকুরের বাড়িতে করোনাকালের আগ পর্যন্ত প্রতিদিনই বাউল আসর বসতো।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ বাউল রণেশ ঠাকুরের গানের ঘরে আগুন লাগানোর ঘটনাটি খুবই গুরুত্বসহ খতিয়ে দেখছে। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিউল্লাহ বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে।