গ্রিসে হবিগঞ্জের দুই যুবকের লাশ উদ্ধার

ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় গুলি করে হত্যা

আব্দুল মমিন ও মোহাম্মদ শাহীন গ্রিসে কন্টেইনারে ডাকাতি করার সময় বাধা দেওয়াই দুই বাংলাদেশি তরুণ আব্দুল মমিন (৩০) ও মোহাম্মদ শাহীন (২৮)-কে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। প্রবাসীদের বরাত দিয়ে নিহত দুই যুবকের স্বজনরা এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রবাসীরা জানিয়েছেন, দেশটির পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ডাকাতির ঘটনায় তাদের হত্যা করা হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র মতে, পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপের দেশ গ্রিসে বসবাস করছিলেন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কামড়াখাই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল মমিন এবং একই গ্রামের নূর হোসেনের ছেলে শাহীন মিয়া। আব্দুল মমিন প্রায় ১৪ বছর ধরে প্রবাসে বসবাস করছেন। গ্রিসের আসপোগিরগো এলাকায় একটি কন্টেইনার কোম্পানিতে পাহারাদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন আব্দুল মমিন। আর শাহীন গত দুই বছর পূর্বে ইরান, তুরস্ক হয়ে গ্রিসে যান। মমিনের কর্মস্থলেই যোগ দেন শাহীন। গত মঙ্গলবার কর্মরত অবস্থায় কন্টেইনারে ডাকাতি করতে আসে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় পাহারাদারের দায়িত্বে থাকা মমিন ও শাহীন দুটি কন্টেইনারে ডাকাতি করতে বাধা প্রদান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্তরা তাদের গুলি করে হত্যা করে।

তাদের নিহতের বিষয়টি প্রবাসে থাকা সহকর্মীরা বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ফোনে জানালে বাড়িতে চলে শোকে মাতম। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন নিহতদের স্বজন ও পরিজনরা। তাদের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি সরকারের সহযোগিতায় দেশে লাশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা। 

গ্রাসে বসবাসরত প্রবাসীদের সংগঠন হবিগঞ্জ জেলা অ্যাসোসিয়েশন ইন গ্রিসের সভাপতি মো. সফিক মিয়া জানান, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে শুনেছি ডাকাতির ঘটনা। তবে গ্রিসের পুলিশ এখনও স্পষ্ট করে কিছুই জানায়নি। কীভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে সঠিকভাবে তা জানতে হলে আরও কিছু সময় লাগবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, নিহতদের কাছে অনেক টাকা পয়সা ছিল, যে কারণে লুটপাট কিংবা ডাকাতির ঘটনাই হতে পারে।’ 

নিহত মমিনের চাচা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রফিক বলেন, ‘সরকারের মাধ্যমে তাদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে আমরা উপকৃত হবো এবং তাদের শেষবারের মতো দেখতে পাবো।’

নিহত আব্দুল মমিনের ভাই আব্দুর রহিম জানান, সরকারের কাছে আমাদের আকুল দাবি, সরকারি ব্যবস্থাপনায় লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য।

নিহত শাহীনের বাবা নূর হোসেন বলেন, ‘আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার ছেলেকে কে হত্যা করছে তা আমি সরকারের মাধ্যমে জানতে চাই।’ 

নিহত মমিনের ভাতিজা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহিউদ্দিন জানান, লাশ দেশে আনার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

আরও পড়ুন...
গ্রিসে হবিগঞ্জের দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার