আমনের বাম্পার ফলন, চাষিদের পরিবারে খুশির জোয়ার

শ্রীমঙ্গল রুপস এলাকায় আমন ধান কাটা চলছে



মৌলভীবাজার জেলায় এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের পরিবারে বইছে খুশির জোয়ার। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। তবে সময়মতো রোদ-বৃষ্টি থাকায় হাকালুকি হাওর, কাউয়াদিঘি ও বাইক্কাবিল হাওরে অনেক অনাবাদি জমিতে আবাদ হওয়ায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দে রয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ২০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে এক লাখ ১ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৮০২ টন। 
রাজনগর উপজেলার মহলাল গ্রামের কৃষক আজাদ মিয়া, রাজা মিয়া বলেন, এবার ৮ একর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে ন্যায্যমূল্য পেলে ধানের ভর্তুকি দিতে হবে না।
একই উপজেলার সুবিদপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়া, পশ্চিম ভাগ গ্রামের সামছুল মিয়া, জিল্লুর রহমান, কণা মিয়াসহ অনেকেই বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করি সঠিক বাজার মূল্য পেলে লাভবান হবেন।
কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বালিয়াগ্রামের ফয়জুর রহমান ফজির বলেন, ৬ কিয়ার জমিতে আমান ধান আবাদ হয়েছে। কৃষক সংকট থাকায় ধান কাটতে বিলম্ব হচ্ছে। 

মৌলভীবাজারে ধান কাটা উদ্ধোধন করেন জেলা প্রশাসক
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওরপাড়ের বড়কাপন গ্রামের ইটা সমাজকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাজন আহমদ বলেন, একসময় কাউয়াদিঘি হাওরের যেসব জমিতে আমন ধান চাষ করা যায়নি, এ বছর সেসব জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিয়ার (বিঘা) প্রতি ১৯-২০ মণ ধান হবে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।

একই এলাকার কৃষক জামাল খান ও ছগির খান জানান, কিছুটা ইঁদুরের উপদ্রব রয়েছে। যদি ইঁদুরের উপদ্রব না থাকতো তাহলে আমন ধানের ফলন আরও ভালো হতো। ১১-১২ বিঘা জমি চাষ করে ৪১-৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদেও চাষাবাদে লাভ হবে।

কৃষি অফিসার মাঠে সরেজমিনে
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ১৮ শতাংশ আমন ধান কাটা হয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটতে সময় লাগছে। আমরাও ধান কাটার মেশিন দিয়ে সহযোগিতা করছি।
আমন ধানের উৎপাদন নিয়ে তিনি বলেন, কৃষি বিভাগের সুষ্ঠু তদারকি এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো রোদ বৃষ্টি হওয়াতে এবার আমন ফসলে পোকার আক্রমণ এবং রোগবালাইয়ের প্রকোপ ছিল না। ফলে জেলায় সার্বিকভাবে আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে।