সামাজিক শাস্তির জেরে হিন্দু বাড়িতে হামলা, গ্রেফতার ২

ইভটিজিংয়ের সামাজিক শাস্তির জের ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাকাটুকিয়া গ্রামে নিরীহ এক হিন্দু বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় বৃদ্ধ ও নারীসহ ৮ জন আহত হন। বুধবার (১৪ এপ্রিল) দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া গ্রামের দেবেন্দ্র বর্মণের বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সত্যেন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় সিরাজ মিয়া ও শহীদ মিয়া নামের দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টাকাটুকিয়া গ্রামের বর্মণপাড়ার স্কুলছাত্রীদের দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করতো পাশের টুকেরগাঁও গ্রামের কাশেম মিয়া, লাইট মিয়া, মুসা মিয়া, পাবেল মিয়া। এ নিয়ে চার মাস আগে টাকাটুকিয়া গ্রামে জামালগড়, রসুলপুর ও টুকেরগাঁও গ্রামের গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে শালিস হয়েছিল। ওই শালিসে ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবে না বলে অঙ্গীকার করেন অভিযুক্তরা। পরে অভিযুক্তদের কান ধরে ওঠবস করানো হয়।

এ ঘটনার জের ধরে বুধবার (১৪ এপ্রিল) দেবেন্দ্র বর্মণের ছেলে সঞ্চিত বর্মণকে রাস্তায় একা পেয়ে মারধর করে টুকেরগাঁও গ্রামের অভিযুক্তরা। তার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন এগিয়ে গেলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। এরপর টুকেরগাঁও গ্রামের ২০-২৫ জন টাকাটুকিয়া গ্রামের দেবেন্দ্র বর্মণের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বাড়ির পুরুষ মহিলাদের বেধড়ক মারপিট করে।

হামলায় আহত হন দেবেন্দ্র বর্মণ (৭০), তার ছেলে বাছিন্দ্র বর্মণ (৫০), সত্যেন্দ্র বর্মণ (৪৫), সঞ্চিত বর্মণ (৩০) বাছিন্দ্র বর্মণের স্ত্রী বিউটি বর্মণ (৪৫), ছেলে বাবলু বর্মণ (১৭), শিপলু বর্মণ (১৫) ও তাদের আত্মীয় দেবল বর্মণ (২২)। হামলায় গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন দেবেন্দ্র বর্মণ, বাছিন্দ্র বর্মণ, বাবলু বর্মণ। তাদের তাৎক্ষণিক তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, টাকাটুকিয়া গ্রামের বর্মণপাড়ার মেয়েদেরকে পাশের টুকেরগাঁও গ্রামের কিছু বখাটে উত্ত্যক্ত করতো। এর জের ধরে বর্মণপাড়ার এক ছেলেকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করে টুকেরগাঁও গ্রামের ছেলেরা। এ ঘটনায় সিরাজ মিয়া ও শহীদ মিয়া নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।