বিয়েবাড়িতে যাওয়া হলো না বাবা-ছেলের, স্বজনেরা হাসপাতালে

দুই মাইক্রোবাসে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন। একটি মাইক্রোবাস রেললাইন পার হলেও অপরটি আটকে যায়। এ সময় আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দিয়ে মাইক্রোবাসটি টেনে নিয়ে যায়। এতে বাবা-ছেলে নিহত এবং তাদের ছয় স্বজন আহত হন।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর এলাকায় রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ফরিদ উদ্দিন (৫২) ও তার ছেলে আফিফ (৬)। আহতরা হলেন নিহত ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে রেজওয়ানা উদ্দিন রিজু (২৪), ছোট ছেলে লাবিব উদ্দিন (৬), ফরিদ উদ্দিনের ভাই কামাল উদ্দিন (৩৫), তার স্ত্রী রুমি বেগম (৩৪), কামালের বোন লিলি বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে রাবেয়া বেগম (২৪)।

আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহতরা সিলেট নগরীর লোহারপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন ও রহিম মিয়াসহ বেশ কয়েকজন জানান, ঢাকা থেকে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন ভাটেরা রেলস্টেশন অতিক্রমের পর হোসেনপুর এলাকায় মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে আধা কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায়। এতে ফরিদ উদ্দিন ও আফিফ ঘটনাস্থলেই নিহত হন। 

নিহতদের স্বজন ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা রুনেল আহমদ বলেন, রবিবার আমার ভাতিজা সোহেল আহমেদ রাফির বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়েতে অংশ নেওয়ার জন্য সিলেট থেকে দুটি মাইক্রোবাস নিয়ে আত্মীয়রা আসছিলেন। পথিমধ্যে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। মুহূর্তে বিয়েবাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া।

আহত রেজওয়ানা উদ্দিন রিজু বলেন, ফুফাতো ভাই সোহেল আহমেদ রাফির বিয়েতে যাচ্ছিলাম। বেলা সোয়া ১১টার দিকে দুটি মাইক্রোবাসে তিন পরিবারের ১৬ সদস্য রওনা হই। দুপুর ১টার দিকে হোসেনপুর লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার নিয়ে যায়।

এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওসার দস্তগীর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, দুই জন নিহত হয়েছেন। ছয় জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। দুপুর ২টার দিকে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।