সুনামগঞ্জে আবারও বাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে হাওরের ফসল

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার হালির হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে বেহেলী, শ্রীপুর দক্ষিণ ও ফতেহপুর ইউনিয়নের ফসল। 

সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে বৌলাই নদীর পানির চাপে বাঁধ ভেঙে গেছে। এলাকাবাসী শত চেষ্টা করেও বাঁধ টিকিয়ে রাখতে পারেননি। 

কৃষকরা জানিয়েছেন, হালির হাওরের ৭১ কিলোমিটার ফসলরক্ষা বাঁধের মধ্যে ১০টির অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অংশ রয়েছে। এর মধ্যে একটি হিজলার বাঁধ। এই হাওরে ৫৮৫৬ হেক্টর জমিতে ধান রয়েছে। 

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, হাওরের ৮০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। বাকি ২০ ভাগ ধান জমিতে আছে। 

পৈন্ডুব গ্রামের কৃষক দীপক তালুকদার বলেন, হাওরের অনেক ধান কেটে জমিতে আঁটি বেঁধে রাখা আছে। পানি আটকানো না গেলে ভেসে যাবে শত শত কৃষকের ধান। একই সঙ্গে দ্রুতগতিতে পানি প্রবেশ করায় ধান শুকানো ও মাড়াই করার স্থানগুলো তলিয়ে যাবে। 

বেহেলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুব্রত সামান্ত সরকার বলেন, সোমবার রাত ১০টার দিকে প্রথমে বাঁধে ছিদ্র হয়ে হাওরে পানি ঢুকে। পরে পানির প্রবল চাপে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকে ফসল ডুবে যায়। রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এলাকাবাসীকে নিয়ে বাঁশ ও বস্তা দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। কোনোভাবেই বাঁধটি রক্ষা করা যায়নি। হাওরে এখনও ৩৫ শতাংশ জমির ফসল কাটার বাকি রয়েছে। পুরো হাওর পানিতে ডুবতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে আরও কিছু ধান কাটতে পারবেন কৃষকরা। বাকিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

জামালগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রেজাউল কবির বলেন, উজানের ঢলে বৌলাই নদীর পানির চাপে বাঁধটি ভেঙে গেছে। এতে ধানগুলো আবারও পানিতে ডুবে গেছে।

জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, বাঁধের প্রায় ৩০ ফুট এলাকা দিয়ে হাওরে পানি ঢুকছে। আমরা বাঁধ এলাকায় অবস্থান করছি। বিপুল পরিমাণ বাঁশের খুঁটি ও মাটির বস্তা, জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি, পানি ঠেকানোর। তবে নদীতে পানির চাপ বেশি থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।