ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যার স্বীকারোক্তি দিলেন স্বামী, জানালেন কারণ

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামে তহুরা বেগম নামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন স্বামী জারু মিয়া। জুয়া খেলার জন্য টাকা না দেওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করেন তিনি। শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আদালতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এই আসামি নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামে স্বামীর বসতঘর থেকে তহুরা বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় স্বামীকে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে দায় স্বীকার করেন। এ ঘটনায় জারু মিয়াকে আসামি করে তহুরা বেগমের আগের স্বামী জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আল-আমিন বাদী মামলা করেন।

আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তহুরা প্রায় তিন যুগ আগে প্রথমে জাহাঙ্গীর মিয়ার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। কয়েক বছর পর বিচ্ছেদ হয়। পরে জারু মিয়াকে বিয়ে করেন। এরপর তাদের পরিবারে মঞ্জিল মিয়া ও রমজান আলী নামে দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করে। জারু মিয়াও এর আগে দুই বিয়ে করেন।

তিনি নিয়মিত জুয়া খেলতেন। প্রায় সময় জুয়ার টাকার জন্য তহুরাকে মারধর করতেন। এই ঘটনায় পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে না পেরে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতের কোনও একসময় হাঁটু দিয়া স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে ঘরে থাকা বাঁশ কাটার ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে।

এ প্রসঙ্গে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ বলেন, স্বামী জারু মিয়া প্রথমে ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে কে বা কারা তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন। ভিন্ন ভিন্ন সময় তার কথার পরিবর্তন হলে সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ । ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন জারু মিয়া। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।