উপহারের ঘর বিক্রির অভিযোগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সিলেটে কয়েক ধাপে গৃহ ও ভূমিহীনদের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। এতে গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতায় ভাসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পান সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার গৃহহীন ও ভূমিহীনরা। শুরু থেকে এ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রকৃত উপকারভোগীদের না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

এই গুঞ্জনের মধ্যেই পাওয়া গেছে নতুন অভিযোগ। জৈন্তাপুর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর থেকে পাওয়া উপহারের ঘর গত ৩০ সেপ্টেম্বর লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

ঘর বিক্রির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তদন্ত উপহারের ঘর বিক্রির সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে প্রকৃত উপকারভোগীরা ঘর পেয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জানা গেছে, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার তফসিলে বর্ণিত ০.০২ একর (দুই শতক) ভূমি সরকারের কাছ থেকে জৈন্তাপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে রেজিস্টার করা দলিলে মুজিবনগর এলাকার উপহারের ঘরের মালিক হন শিরিনা বেগম। গত বছরের ১৯ জুন জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ১৮৯/২০২০-২১ নং নামজারি মোকদ্দমার আদেশ মোতাবেক পৃথক ৩০৬ নং খতিয়ানে নিজ নামে নামজারি রেকর্ড করা মালিক হয়ে বর্ণিত ভূমির সব ক্ষমতার সহিত নির্বিবাদে নির্ভেজাল অবস্থায় মুজিবনগরের ঘরে ভোগদখলকার হিসেবে আছেন।

তবে ইস্তফানামা পত্রে দেখা গেছে, বর্ণিত ভূমির মাটি কাটা, গর্ত ভরাট করার পাশাপাশি বন পরিষ্কার করে গৃহ নির্মাণ বাবদ এক লাখ টাকা নির্ধারণ করে সাক্ষীদের সম্মুখে ভূমির ওপর আধাপাকা টিনশেডের বসত ঘর বিক্রয় করে ইস্তফানামা পত্র সম্পাদন করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ১৯ বছর ধরে মেয়াদি মালিকমূলে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করেন।

এর আগে জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল এলাকায় বেশ কয়েকজনকে বাড়ি ঘর থাকার পরও রহস্যজনক কারণে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হলে সেই ঘর সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদের কাছে উপহারের এসব ঘর ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ফেরত হওয়া ঘরগুলো প্রকৃত ভূমিহীনদের দেওয়া হয়।

ওই ঘরে ক্রেতা তাজুল ইসলাম মনু এবং তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার বলেন, ‘কয়েকদিন ঘরে বসবাস করে জানতে পারি, এটি সরকারি মুজিব বর্ষের ঘর। বিষয়টি জানতে পেরে মুজিববর্ষের ঘর বিক্রেতা শিরিন আক্তারকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলার পরও তিনি টাকা দেননি। এমনকি টাকা ফিরত দিতে অস্বীকার করেন।’