ঢাকা লিট ফেস্টে সারাহ গিলবার্ট 

‘সব ভ্যারিয়েন্টের জন্য একই ভ্যাকসিন নিয়ে আমি আশাবাদী না’

অক্সফোর্ডের করোনা প্রতিরোধক টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা’র সহ-উদ্ভাবক সারাহ গিলবার্ট বলেছেন, ‘করোনার ভিন্ন ভিন্ন ধরনের জন্য একই ভ্যাকসিন নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে আশাবাদী না। আমরা যে ভ্যাকসিন তৈরি করা শুরু করেছি, সেটি নির্দিষ্ট স্পাইক প্রোটিনে কাজ করে। এটি অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে, যাতে ভাইরাসকে অবরুদ্ধ করতে পারে। ভাইরাসকে প্রবেশে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘স্পাইক প্রোটিন বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টে বদলায়। সব ভ্যারিয়েন্টের জন্য একই ভ্যাকসিন তৈরি করতে গেলে হয়তো আমাদের ভাইরাসের মূলে যেতে হবে। আমার কাছে এটি অসম্ভব মনে হয়। আমি এই মুহূর্তে ব্যাপক হারে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত বলে মনে করি।’
    
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেশনে দর্শকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। 

এসময় নিজের গবেষণা শুরুর অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সারাহ বলেন, ‘আমি ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজ দিয়ে উপকৃত করতে চাই। আমি কর্মজীবনের শুরুতে যখন গবেষণা শুরু করতে চাই, তখন স্বাধীনভাবে গবেষণার জন্য অর্থায়ন করার মতো কাউকে পাইনি। এটার একটি কারণও আছে। পিএইচডি করার পরও আমার কারও অধীনে দীর্ঘ সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল না। তাই আমাকে নিজের অর্থায়ন নিজেরই জোগাড় করতে হয়েছিল। তাই বলবো, সফলতা ধীরে ধীরে আসতে পারে। কিন্তু তার মানে এই না যে যাত্রাটি উপভোগ করা যাবে না।’

ছবি সাজ্জাদ হোসেন

এসময় তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জীবনে যখন যেটার প্রতি আগ্রহ থাকবে, যেটার জন্য কঠিন সাধনা করার ইচ্ছা থাকবে, সেই বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকা উচিত। এমন কোনও বিষয় এটা ভেবে নির্বাচন করা উচিত হবে না যে এটি পড়ে পাস করলে অনেক টাকা কামানো যাবে। সেটাই নির্বাচন করবেন, যেটার প্রতি আপনার অসীম আগ্রহ।’ 

অতীতের সঙ্গে এখনকার সময়ে অনেক ফারাক উল্লেখ করে সারাহ আরও বলেন, ‘আগে টেস্ট কিট ছিল না, এখন আছে। পরীক্ষার সময় কমে এসেছে। আমরা এখন চিন্তাও এনালাইসিস করার জন্য অনেক সময় পাই। আগে পরীক্ষায় শুধু অনেক সময় চলে যেতো।’

এসময় সঞ্চালক ও বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা নীতিনির্ধারকদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, গবেষকদের জন্য গবেষণার কাজে ব্যবহৃত উপকরণের জন্য যেন কাস্টমস ব্যবস্থা সহজ করা হয়। 

আলোচনায় আরও অংশ নেন পাটের জিন আবিষ্কারক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসিনা খান এবং গবেষক অধ্যাপক ইয়াসমিন হক।