আশাবাদ, শঙ্কা ও যাপনের আখ্যান

ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলা একাডেমির ভাস্কর নভেরা মিলনায়তনে কাইজার হকের দি ফাইনাল ফ্রন্টিয়ার, সাদ জেড হোসেনের দি লাস্ট সিইও ও আবীর হকের লাভ ইন দি টাইম অফ কম্পোস্টিং প্রদর্শিত হয়েছে। প্রতিটি প্রদর্শনী ভিন্নধর্মী হলেও এক সুতোয় গাঁথা যায়। কারণ আমাদের জীবনের সবটুকু অংশই শৈল্পিক অভিব্যক্তিতে এখানে উঠে এসেছে। আশাবাদ, শঙ্কা ও যাপন ছাড়া আর কী-ই বা আছে জীবনে?

দি ফাইনাল ফ্রন্টিয়ার কবি কাইজার হকের বিখ্যাত কবিতা। ডিজিটাল স্ক্রিনে তাঁর কণ্ঠেই আমরা কবিতাটি শুনি। শুনে মনে হচ্ছিল তিনি এক মুসাফির, দূরে যাবার পথে উৎসুক শ্রোতাদের সামনে গল্প বলছেন। কবিতা লিখা ও পাঠের এই ধারার আশ্রয় নিয়ে তিনি যেমন পশ্চিম-প্রাচ্যের দেওয়া-নেওয়া নিয়ে কথা বলেছেন, তেমনি বলেছেন পরিবেশবাদ নিয়ে, সামাজিক পরিচয় নিয়ে। যথেষ্ট স্পটলাইটের অভাবে থাকা বাংলাদেশকে নিয়ে ভবিষ্যতের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ইংরেজিতে লিখা কবিতাতেও কী দারুণভাবে তিনি বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরেছেন! দর্শক-শ্রোতারা সমস্বরে করতালি দিয়ে তাঁর আবৃত্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন।

দ্বিতীয় অংশে ‘দি লাস্ট সিইও’ চলচ্চিত্রে আমরা ২০৫৭ সালের পৃথিবীর কাল্পনিক চিত্র দেখতে পাই। সাদ জেড হোসেনের পরিচালনায় প্রায় তিন মিনিটের শক্তিশালী অ্যানিমেশনটি আমাদের ভাবায়। অজানা ভবিষ্যতে নৈরাজ্য কেমন প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে আমরা তা অনুভব করতে পারি। যেভাবে উন্নয়ন ও অর্থের বেড়াজালে আটকে থাকি আমরা—এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি তা নিয়েই ভাবাবে, শঙ্কার উন্মেষ ঘটাবে।

সবশেষে আবীর হকের ‘লাভ ইন দি টাইম অফ কমপোস্টিং’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে দুই বাংলাদেশি আমেরিকানের প্রেমের গল্প বলা হয়েছে। দুই ঘরানার ও বিপরীতমুখী রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী তরুণ-তরুণীর প্রেম, আমেরিকান বাংলাদেশি হিসেবে সামাজিক সম্পর্ক ইত্যাদি উঠে এসেছে। মোটকথা তাদের প্রাত্যহিক যাপন নাটকের ঢঙ্গে কেবল সংলাপ ও ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

সকাল ১১:১৫ মিনিটে শুরু হওয়া সেশনটি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। দর্শকরা নিশ্চয়ই উপভোগ করেছেন।