অনলাইনে বইয়ের দোকান: সংকট ও সম্ভাবনার দুয়ার

ছাপার অক্ষরের বই নাকি ই-বুক, বইয়ের দোকানে গিয়ে বই কেনা নাকি অনলাইনের দোকান? এমন মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করানোর দরকার নেই বলে মনে করেন দেশের প্রকাশকরা। তারা বলছেন, অফলাইনের ছাপা ও বিক্রি উভয়ই থাকবে কিন্তু আধুনিক যুগে প্রযুক্তিকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই বলে অনলাইন বই ও দোকান নিয়ে নতুন করে পরিকল্পনার দরকার আছে। অনলাইনের বই ছাপা ও বিক্রি নিয়ে সম্ভাবনা যত আছে, শঙ্কাও কম নেই। ঢাকা লিট ফেস্ট ২০২৩ এর শনিবারের আয়োজনে আলোচনার বিষয় ছিল বইয়ের বিপণন- দোকান পেরিয়ে অনলাইন।

সৈয়দ জাকির হোসাইনের সঞ্চালনায় কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে আলোচনায় প্রকাশক শুভঙ্কর দে বলেন, ‘অনলাইনে দুটো পদ্ধতি আছে। একটা ই-বুক আর আরেকটি বইয়ের দোকান। অনলাইনে যে বইটা সেটা সামনাসামনি দেখে, উল্টেপাল্টে কেনার মধ্যে অন্য অনুভূতি কাজ করে।’

যুক্ত প্রকাশনীর প্রকাশক নিশাত জাহান রানা বলেন, ‘মানুষের জীবনের জীবনে সূক্ষাতিসূক্ষ ভাবনা যা কিছু আছে, যা কিছু পাণ্ডুলিপিতে আনেন মানুষেরই জন্য, সেই ভাবনাগুলোকে বই তৈরির মধ্য দিয়ে আবারও মানুষেরই কাছে যে প্রকাশক পৌঁছান- তিনি নিশ্চয় তার সর্বোচ্চ মেধা, তার ভাবনা দিয়ে চেস্টা করেন তা গ্রন্থবদ্ধ করতে। বিপণনের বাস্তবতা বড় নির্মম। বাজারের চরিত্রও তাই। বইয়ের দোকান থেকে এই অনলাইনের জগতে আসার সম্ভাবনা ও সঙ্কট দুই-ই আছে।’ 

প্রকাশক খান মাহবুব মনে করেন এখন চাইলেও অনলাইনকে অস্বীকার করা যাবে না। কোভিড পরবর্তী নিউ-নরমাল সময়ে সব দেওয়া গেলেও সময় দেওয়া যায় না। অনলাইনের সুবিধা হলো এর বৃহৎ পরিসর। কিন্তু ছোট ও মধ্যম পুঁজির প্রকাশকরা সংকটে পড়ে যাচ্ছে।

কলকাতা - ঢাকার বিপণন নিয়ে কথা বলেন মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আলোচনায় দোকান ও অনলাইনকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে আমি চাই না। যেহেতু প্রযুক্তিকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না, ফলে নতুন করে পরিকল্পনাটা করতে হবে।’

আরেক আলোচক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘কোভিডের পরে দোকান বন্ধ হয়েছে তা নয়। আরও আগে থেকে সেটা শুরু হয়েছে। বইকে ভালোবেসে অনেকে ফেসবুককেন্দ্রীক বিপণনে গেছেন। কিন্তু প্রকাশিত ছাপা বইয়ের কদর তাতে কমবে না। স্টোরের কমতি মনে খচখচ করবে। অনেক বই ই-বুকে নামিয়ে রেখেও হয়তো পড়া হয় না, হাতের সামনে বই থাকলে সেটা পড়া হয় সহজে। ফলে অনলাইন একটা মাধ্যম কিন্তু তাতে ছাপার সঙ্গে কোনো সাংঘর্ষিকতা তৈরি হবে না।’