ঢাকা লিট ফেস্টে অমিতাভ ঘোষ

‘একটু মজা না করে বই লেখা আমার জন্য অসম্ভব’

ভারতীয় লেখক ও সাহিত্য সমালোচক অমিতাভ ঘোষের ‘দ্য নাটমেগস কার্স’ বই নিয়ে ঢাকা লিট ফেস্ট প্রাঙ্গণে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) লেখকের সঙ্গে কথা বলেছেন মিশেলা চৌধুরী। আলাপচারিতার চুম্বকাংশ এখানে তুলে ধরা হলো।

আপনার অভিজ্ঞতা প্রচুরঅনেক গবেষণা হয়েছে আপনার বই নিয়ে। যখন একটি নতুন প্রকল্প শুরু করেন তখন কোন গল্পটি বলবেনসিদ্ধান্তটি কীভাবে নেন আপনি?

অমিতাভ ঘোষ: এটি সচেতন প্রক্রিয়া নয়। ধরুন—আপনি প্রায়ই লিখতে চান এবং আপনি জানেন না ঠিক কী নিয়ে লিখতে হবে। অথচ আপনার সামনেই কাগজ পড়ে আছে। তারপর একদিন হঠাৎ করে লিখতে বসলে একটা ধারণা হয়। এটা হয় অবচেতন মনে।

আপনার বই উপনিবেশবাদ এবং পরিবেশগত ক্ষতির মতো গুরুতর বিষয়গুলো তুলে ধরে। এ বিষয়গুলো নিয়ে আপনার সচেতনতা কী স্থানগুলো ভ্রমণের আনন্দকে এক পাশে সরিয়ে দেয়?

অমিতাভ ঘোষ: আমি খুব গুরুগম্ভীর বিষয় নিয়ে লিখি। কিন্তু আপনি দেখতে পাবেন—আমার বইগুলো হতাশাজনক নয়। একটু মজা না করে বই লেখা আমার জন্য অসম্ভব। বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করা একটি অদ্ভুত জিনিস। যে কোনও স্থানে ভ্রমণ ততক্ষণ বাস্তব হয়ে ওঠে না যতক্ষণ না আপনি এটি সম্পর্কে লিখছেন। সত্যিকারার্থে লেখার মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়

কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে দ্য নাটমেগস কার্স লিখেছেন। কতটা সময় নিয়েছেন এই বইয়ের পরিকল্পনায়? মহামারির সময়ে বই লেখার চ্যালেঞ্জগুলো কেমন ছিল?

অমিতাভ ঘোষ: অনেক দিন ধরেই বইটি নিয়ে ভাবছিলাম। মূলত মহামারির প্রথম সপ্তাহেই এটি লিখতে শুরু করি। প্রায় আট মাসের মতো লেগেছিল, এটি আমার জন্য একটি রেকর্ড। এই মহামারি এক ধরণের গভীর মনোযোগের সুযোগ করে দিয়েছে। আগের বই ‘দ্য গ্রেট ডিরেঞ্জমেন্ট’ যখন লিখেছিলাম বিভিন্ন বিষয়ে চিন্তা করেছিলাম এবং অনেকগুলো ঝুলন্ত প্রান্ত ছিল সেখানে। আমি সেগুলো একসূত্রে গাঁথতে শুরু করি। তবে লাইব্রেরিতে যেতে না পারার মতো চ্যালেঞ্জ ছিল।

গল্প বলায় নন-ওয়েস্টার্ন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেছেন। এ পদ্ধতি আপনার লেখাকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে?

অমিতাভ ঘোষ: আমার বই ‘গান আইল্যান্ড’ সত্যিই এর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। এটি সেভাবেই লেখা হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার উপন্যাসের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কী বলেন?

অমিতাভ ঘোষ: দক্ষিণ এশীয় ঔপন্যাসিকরা মানুষের আবেগ ও সম্পর্ক নিয়ে খুব খোলামেলা লেখেন। এছাড়াও বিস্তৃত রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়েও আলোকপাত করেন। আমাদের বইগুলোতে খুব মানবিক পরিস্থিতির অবতারণা করা হয়। ফলে সেগুলোর একটি সর্বজনীন আবেদন রয়েছে। আমি আশা করি দক্ষিণ এশিয়ার লেখকরা এই দিকটি ধরে রাখবেন।

প্রায়ই যখন আপনি একটি আমেরিকান বই পড়ার চেষ্টা করেন তখন প্রসঙ্গটি বোঝা কঠিন। কারণ এটি দূরবর্তী ও সুনির্দিষ্ট

অমিতাভ ঘোষ: কয়েক বছর আগে যখন আমেরিকায় ছিলাম, আমার বইয়ের রিভিউ পড়তাম। তারা প্রায়ই বলতো, তৃতীয় বিশ্বের লেখকরা সবসময় রাজনীতি নিয়ে লিখছেন, কারণ তাদের জীবন কঠিন ছিল। ট্রাম্পের পর থেকে গত পাঁচ বছরে আমেরিকানরা রাজনীতি নিয়ে লিখছেন। তারা কিছু অদ্ভুত উপায়ে আমাদের পথ ধরেছেন।