টিল্ডা সুইনটনের চোখে কবিতার মানে...

‘আমার কাছে কবি হলেন কবিতার জাদু! যেকোনও কবিতা পড়লে আমি বোঝার চেষ্টা করি। কবিতা ভাবার বিষয়, কবিতা জীবনের কথা বলে’-কথাগুলো বলছিলেন অস্কারজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী টিল্ডা সুইনটন। দশম ঢাকা লিট ফেস্টে শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এসেছিলেন তিনি।

টিল্ডা সুইনটনের অংশগ্রহণে এই আড্ডার শিরোনাম ছিল ‘দ্য রিডার ইন রেসিডেন্স’। সঞ্চালক ঢাকা লিট ফেস্টের অন্যতম পরিচালক আহসান আকবার বলেন, ‘আমরা এই শিরোনাম রেখেছি, কারণ টিল্ডা সুইনটন নিজের বাড়িতে একজন পাঠক। তিনি বাড়িতে যেসব কবিতা পাঠ করেন, আজ আমরা সেগুলোর গল্পই শুনবো।’

আলোচনার শুরুতেই ঢাকা লিট ফেস্টের সঙ্গে জড়ানোর গল্প বলেন টিল্ডা সুইনটন। ৬২ বছর বয়সী এই তারকা জানান, আহসান আকবারের মুখে প্রথম এই উৎসবের কথা শুনে ঢাকায় আসার আগ্রহ জন্মে তার। সাহিত্যের প্রতি গুণী এই অভিনেত্রীর ভালো লাগা সেই শৈশব থেকে। তিনি নিজে একসময় নিয়মিতই কবিতা লিখতেন, পরে অবশ্য আর লেখালেখিতে এগোননি। এখন নিয়মিত পড়লেও কবিতা লেখাটা চর্চা করা হয়ে ওঠে না।

এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা লিট ফেস্টে অংশ নিলেন টিল্ডা সুইনটন। তার কথায়, ‘ঢাকায় আমার বারবার আসার একটাই কারণ, আমি শিখতে চাই। সত্যি বলছি, একজন দর্শক হিসেবেই আমি উৎসবটিকে দেখি। অনেক সাহিত্যিকদের সঙ্গে দেখা হয় এখানে। বাংলাদেশের লেখকদের মধ্যে আহসান আকবারের কবিতা পড়ে ভালো লেগেছে।’

নজরুল মঞ্চে নিজের প্রিয় কয়েকটি কবিতা পাঠ করেন টিল্ডা সুইনটন। প্রথমে ব্রিটিশ কবি জর্জ বারকারের ‘পোয়েট্রি’ শিরোনামের কবিতা পড়েছেন তিনি। এরপর ট্রেনে লন্ডন থেকে এডিনবরা যাওয়ার স্মৃতি নিয়ে স্কটিশ কবি নরম্যান ম্যাকের লেখা একটি কবিতা পাঠ করেন। পরে আরও কয়েকটি ইংরেজি কবিতাও পড়েন তিনি। 

সঞ্চালক মনে করিয়ে দেন, গতকাল শুক্রবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে টিল্ডা সুইনটনের সঙ্গে আলাপচারিতায় অনেক কথা বলেছেন। সেই আড্ডার শিরোনাম ছিল ‘আ স্যালুট টু ফেলোশিপ’। তাই নজরুল মঞ্চে অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রীকে তিনি আলাদা করে প্রশ্ন করেননি। পুরো সময়টাই দর্শকদের প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়েছেন এই সাহিত্যিক। 

তিন যুগের বেশি বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন টিল্ডা সুইনটন। তাদের মধ্যে আলাদা করে বলা যায় জর্জ মিলার, ডেভিড ফিঞ্চার, জিম জারমাশ, ওয়েস অ্যান্ডারসন, জোয়েল ও এথান কোয়েন প্রমুখ। তাদের মধ্যে কে তার প্রিয় পরিচালক? এক দর্শকের এমন প্রশ্নের উত্তরে কৌশলী হয়ে গেলেন তিনি, ‘আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না! তারা প্রত্যেকে আমার কমরেড। সবার সঙ্গে কাজ করে ভালো লেগেছে। সবাই আমার প্রিয়।’

অনুষ্ঠানে দেখা গেছে বেশকিছু শিক্ষার্থীকে। তরুণ-তরুণীরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন এই আয়োজনে। শেষ দিকে দুই দর্শককে নিজে থেকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়ে সবার মন কেড়েছেন টিল্ডা সুইনটন। আড্ডা শেষে স্কুল ইউনিফর্ম পরে আসা শিক্ষার্থীদের ছবি তোলার আবদারও মিটিয়েছেন তিনি।