‘গল্প’ তৈরি হয় যেভাবে

আনজুম এন চৌধুরী পড়েছেন অর্থনীতি ও গণিতের মতো নিরস বিষয়ে। কিন্তু নিজের অস্ত্বিত্বের পরিচয়ে হয়ে উঠেছেন গল্প কথক। উপন্যাস ও ছোট গল্পের মাধ্যমে নিজের বুনন করা গল্পগুলো বলে চলেছেন দিব্যি। জীবনের বড় একটা সময় কাটিয়েছেন নেপাল, ভারত ও নেদারল্যান্ডসে। কৈশরে নেপাল ও ভারতে থাকায় নিজের মনের ভেতরে রুপকথা ও কল্পকাহিনী গেঁথেছিলেন। নিজের লেখা 'দ্য ডিভাইন থ্রেড' ছোটগল্পে সেই ছোটবেলায় পড়া মুঘল স্থাপনার আদলেই গল্প বলেছেন আনজুম চৌধুরী। 

নিজের লেখা কল্পকাহিনী, অনুগল্প বলার ধরন নিয়ে ঢাকা লিট ফেস্টের সমাপনী দিন রবিবার (৮ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমির কসমিক ট্যান্টে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আনজুম এন চৌধুরী। সঞ্চালক ছিলেন কল্পকাহিনী লেখক, সাংবাদিক সাবরিনা ফাতমা আহমেদ। 

সঞ্চালক সাবরিনা 'দ্যা ডিভাইন থ্রেড' গল্ল নিয়ে আলোচনার সময় লেখকের কাছে জানতে চান ‘উপন্যাস না লিখে কেন আপনি ছোটো গল্পে আগ্রহী হলেন?’ উত্তরে আনজুম চৌধুরী হাসির ছলেই বলেন, ‘আমার প্রকাশকের ইচ্ছায়।’ আনজুম চৌধুরী মনে করেন, গল্প বলার ধরনটা যাতে নিজের কথাগুলোই বলা হয়। 

ডিভাইন থ্রেডের গল্প তৈরি সম্পর্কে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে, বিভিন্ন সময় থেকে উপাদান নিয়েছি। আমার ছোটবেলাটা আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে এই বইটি লেখার ক্ষেত্রে। অনুগল্প হতে হবে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়, যাতে এর মধ্যে কোনও মিথ্যা না থাকে।’গল্প তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন আনজুম চৌধুরী। অনুগল্পের চরিত্রের বেড়ে ওঠা এবং সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বআরোপ করেন এই লেখক। 

এক পর্যায়ে সঞ্চালক গল্পকার সাবরিনার কাছে এবার আলোচক আনজুম চৌধুরী জানতে তার ভ্রমণ প্রসঙ্গে। এর জবাবে সাবরিনা বলেন, ‘আমি ছোটোবেলায় বাবার সঙ্গে রোজার মাসে সেহরি'র সময়ের স্মৃতিগুলোই আমাকে 'সেহরি টেলস' গল্প লিখতে সাহায্য করেছে। আমি এক অনুচ্ছেদের এবং এক আলোচনার গল্প অপছন্দ করি।’

আনজুমের কাছে আবার তার গল্প সম্পর্কে জানতে চান সঞ্চালক। তিনি বলেন, ‘আমি গল্পের মধ্যে থাকতে পছন্দ করি। এই চরিত্র এক সময় আমার বন্ধু হয়ে যায়।’ 

সঞ্চালক আনজুম চৌধুরীর কাছে অনুগল্পের শব্দ সীমাবদ্ধতার সুবিধা সম্পর্কে জানতে চাইলে আনজুম বলেন, ‘২৫০ শব্দের মধ্যে যখন আমি গল্প বলতে পারিনা, তখন মাথার মধ্যে থাকা বাকী আইডিয়াগুলো পরের গল্পে যুক্ত করে নেই।’

আলোচনা পর্বের শেষের দিকে উপস্থিত দর্শকের সাথে সরাসরি গল্প তৈরির প্রক্রিয়া দেখিয়ে দেন আলোচক আনজুম চৌধুরী ও সঞ্চালক সাবরিনা ফাতমা। দর্শকরা নিজেরাই নিজেদের গল্পের চরিত্র তৈরি করে ফেলেন মুহূর্তেই।