ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তুহিন কান্তি দাস ডাকসু নির্বাচনের আন্দোলনকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দাবি করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে। তাই ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না করে শিক্ষকদের প্রতিনিধি নির্বাচন যুক্তিহীন। সেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন তথা ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছে।’
ডাকসুর দাবিতে আয়োজিত মানবন্ধনে কী ঘটেছিল, জানতে চাইলে ঢাবি ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভা মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা সিনেট ভবনে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। এসময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ ও সহকারী প্রক্টর রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষক এসে আমাদের আন্দোলনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এসময় আমাদের নেতাকর্মীদের কিল-ঘুষি মারা হয়।’
মানববন্ধনে ‘শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট নির্বাচন মানি না’, ‘শিক্ষার্থী প্রতিনিধিহীন সিনেট নির্বাচন অবৈধ’, ‘অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিয়ে দাও’, ‘উই ডিমান্ড ডাকসু’, ‘নো সিনেট উইদাউট স্টুডেন্ট’ লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ হাতাহাতির বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশনসহ বাম কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের সাত-আট জন শিক্ষার্থী মুখে কালো কাপড় বেঁধে সিনেট নির্বাচনের নির্বাচনস্থলের আশপাশে অবস্থান নিয়ে মাইক নিয়ে অযৌক্তিক স্লোগান দিচ্ছিল। এসময় আমি তাদের সরে যেতে বললে তারা অস্বীকৃতি জানায়। পরে আমি ও আমার সঙ্গে থাকা কয়েকজন শিক্ষক তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।’ এ ধরনের ঘটনাকে তিনিও দুঃখজনক বলে অভিহিত করেন।
এদিকে ঘটনার পর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাহমিদুল হক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ঢাবি সিনেট নির্বাচন চলাকালে সিনেটে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বের দাবিতে নির্বাচন কেন্দ্রে হাজির হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর দলবাজ শিক্ষকদের হামলার নিন্দা জানাই। লজ্জাই লাগছে! শিক্ষকরা কোনও অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের ধাক্বা দিতে কিংবা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি করতে পারেন না। শিক্ষার্থীরা অনেক ‘অ্যাগ্রেসিভ’ হলেও পারেন না। তাদের উপস্থিতি বা মুখের কথাই যথেষ্ট হওয়ার কথা।’
ফাহমিদুল হক লিখেছেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের এই দাবি সমর্থন করি। প্রতিবছর শিক্ষক-প্রতিনিধিত্বের নির্বাচন হবে, শিক্ষার্থী-প্রতিনিধিত্বের নির্বাচন যুগ যুগ বন্ধ থাকবে— এটা হতে পারে না।’
আরও পড়ুন-
ঢাবি’র সিনেট নির্বাচনে নীল দল জয়ী
/কেআরএম/ইউআই/টিআর/