নির্বাচন না হওয়ার অপসংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই: ঢাবি ভিসি

 

অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান (ফাইল ছবি)২৭ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়াকে অপসংস্কৃতি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘গত ২৭ বছর ডাকসু নির্বাচন হচ্ছে না। নির্বাচন না হওয়ার যে অসংস্কৃতি চালু আছে, আমরা সেখান থেকে বের হয়ে আসতে চাই। আগামীতে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেবো। রাষ্ট্রপতি ও হাইকোর্টের ডাকসু নির্বাচন করার নির্দেশনা রয়েছে।’ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাবি ভিসি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের প্রয়াস থাকবে আমাদের। সুচিন্তিত ও সুপরিকল্পিভাবে সমন্বয়নধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের আগাতে হবে। কোনও হটকারি, উসকানিমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে আগানো যাবে না।’

বর্তমান  ডাকসু ভবনের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার ঢাকা ভিসি বলেন, ‘নির্বাচন না হওয়ার কারণে ভবনের এ অবস্থা। নির্বাচন হলে ডাকসু ভবন আগের মতোই প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে পাবে। ডাকসু ভবন সম্প্রসারণ করারও চিন্তা আছে আমাদের। ডাকসু ভবনকে আরও আধুনিকায়ন করা হবে। সেখানে ১৮ তলা ভবন করা পরিকল্পনা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাকসু ভবন আধুনিকায়ন করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ভবনের ডিজাইনসহ আরও অনেক কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরপর এটি পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। আশা করি, ইতিবাচক সাড়া পাবো। এরপর ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। কিছু দিন সময় লাগবে।’

ডাকসু নির্বাচন হলে বর্তমান ভবন দিয়ে কাজ পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আগে ছিল ৬৮ হাজার ছাত্র। এখন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হচ্ছে ৪০ হাজার। এত শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বড় স্পেস দিতে হবে। সেই চিন্তা করে আমরা এ ভবনটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।’

ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সন্ধ্যাকালীন স্নাতকোত্তর কোর্সের ছাত্র ওয়ালিদ আশরাফের অনশনের বিষয়ে ভিসি বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানি না। গত কয়েকদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে অনেক ব্যস্ত ছিলাম। অনশনকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র কিনা, সেই বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে সবার স্বাধীনতা আছে, যে কেউ নির্বাচনের দাবি জানাতে পারেন।’

বিগত ২৭ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন হয় না। অথচ ডাকসু বাবদ বরাদ্দ ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। এই হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাগারে থাকার কথা বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে জানতে ঢাবি ভিসি বলেন, ‘গত ২৭ বছরে ডাকসুর টাকা কত বরাদ্দ হয়েছে, কত খরচ হয়েছে, খরচ হলেও কোথায় কোন খাতে খরচ হয়েছে অথবা আদৌ হয়েছে কিনা, তা হুট করে বলা সম্ভব নয়। এটা অনেক হিসাব-নিকাশের ব্যাপার। টাকার হিসাব নিয়ে কথা বলতে হলে আগে এই হিসাব নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করতে হবে। একটু সময় দিতে হবে এর পেছনে। এরপরই সুস্পষ্ট করে তথ্য দেওয়া যাবে। ’