এইচএসসিতে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে

এইচএসসিতে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেএবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট আগেই পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছাতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নম্বরে সেটকোড ব্যবহারের নির্দেশনার এসএমএস যাওয়ার পর প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা যাবে। বুধবার (২৮ মার্চ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এইচএসসিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি আমরা। এক্ষেত্রে আগের চেয়ে অনেক বেশি কৌশলী পন্থায় এগোচ্ছি। সবার সহযোগিতাও চেয়ে আসছি। আমাদের চাওয়া, প্রশ্নপত্র ফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজবে না মেতে অভিভাবকরা যেন ছেলেমেয়েদের ভালোভাবে লেখাপড়া করান। শিক্ষার্থীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর অভিভাবককে খেয়াল রাখতে হবে। অভিভাবকসহ শিক্ষার্থীদের প্রতি দৃষ্টি দিতে শিক্ষকদের কাছে আবেদন জানাই।’

জানা গেছে, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইজ নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছবি তোলা যায় না এমন একটি মোবাইল সেট ব্যবহার করতে পারবেন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। কেন্দ্রে যারা দায়িত্বে থাকবেন তাদের নির্দেশনা ভালোভাবে পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। তার আশা, ‘এবার যে ব্যবস্থা নিয়েছি, তাতে আর সমস্যা হবে না।’
প্রশ্নফাঁস রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আরেকটু ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তার মন্তব্য, ‘ফেসবুকে আগে দেওয়া পোস্টে প্রশ্ন পরে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে দেখানো যায় প্রশ্নফাঁস হয়েছে। সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিপাকে ফেলতেই এসব করা হচ্ছে। এর পেছনে কাজ করছে কিছু শক্তি। তারা সরকারের ভাবমূর্তি, জনপ্রিয়তা ও সাফল্যকে চাপা দিতে চায়।’
অতীতের মতো এবারও সম্পূর্ণ নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হবে বলে আশা শিক্ষামন্ত্রীর। তার ভাষ্য, ‘২০১২ সালে কেবল বাংলা প্রথম পত্রে সৃজনশীল পরীক্ষা হয়েছিল। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৩টি বিষয়ের ২৫টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৭ থেকে মোট ২৮টি বিষয়ে ৫৪টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’

মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ফাঁসের গুজবের সঙ্গে জড়িত ১৫৭ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এসএসসিতে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, এবার তত্ত্বীয় পরীক্ষা চলবে ২ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত। ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে ১৪ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত। পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৩ লাখ ১১ হাজার ৪৫৭ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ জন, ছাত্রী ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭২৭ জন। সারাদেশে ২ হাজার ৫৪১টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে এইচএসসি পরীক্ষা।