সবাইকে বিদ্যালয়ে আনতে শিশু জরিপ শুরু করছে সরকার

বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে ২০২১ সালে শিশু জরিপ শুরু করছে সরকার। শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত সারাদেশের সব শিশুকে আনা হবে এই জরিপের আওতায়। শিগগিরই এই জরিপ কাজ শুরু করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শূন্য থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সব শিশুকে জরিপের আওতায় আনা হবে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে ভর্তির সময় অনেক শিশুকে খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তির বাইরে যেনও কোনও শিশু না থাকে সে জন্য জরিপ করা হবে।’

‘এই জরিপের পর আমাদের সব শিশুদের ইউনিক আইডি হয়ে যাবে। তখন আর এই জরিপের প্রয়োজন হবে না। জন্ম নিবন্ধনের আওতায় শিশুরা ইউনিক আইডি পেয়ে যাবে’-বলেন তিনি।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোফাইল প্রণয়ন’ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) -এর ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইআইএমএস)’ শীর্ষক দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিক আইডি (একক পরিচয়) সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন জেনারেলের কার্যালয় ও নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অণুবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতরের সহায়তায় এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এতে ৫ বছর থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি দেওয়া হবে। আর ১৮ বছর পর ইউনিক আইডি রূপান্তরিত হবে জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকে শিশু জরিপ এবং ৫ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ভবিষ্যতে জনসংখ্যা জরিপের কাজও এই প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা যাবে। জনসংখ্যা জরিপে যেসব তথ্য থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি তথ্য থাকবে এই প্রক্রিয়ায়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাসিক সমন্বয় সভায় শিশু জরিপের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় বলা হয়, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ইউনিটের তত্ত্বাবধানে ২০১০ সালে শিশু শিক্ষা জরিপ করা হলেও প্রতিবেদন প্রকাশ হয়নি। ২০২০ সালে শিশু শুমারি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে আলোচনা করলেও অর্থের অভাবে কোনও কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীন ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস’ (সিআরভিএস) প্রকল্পের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ইউনিক আইডি এবং সকল তথ্যাদি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

সভায় সিদ্ধান্ত জানানো হয়, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) -এর সঙ্গে আলোচনা করে জরিপ সম্পাদনের লক্ষ্যে নথি উপস্থাপন করতে হবে। এটি বাস্তবায়নের জন্য পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন ইউনিটের পরিচালককে দায়িত্ব দেওয়া হয়।