অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে ‘লাল তারকা’

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়া প্রোগ্রাম ও কোর্স পরিচালনা এবং অনুমোদিত আসন  সংখ্যার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘লাল তারকা’ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৯ জুলাই) ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এদিকে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ইউজিসি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউজিসির অনুমোদনহীন ভবন ও ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, ছয় মাসের বেশি আচার্য নিযুক্ত উপাচার্য ও ট্রেজারার না থাকা, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের মালিকানা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বসহ অন্যান্য সমস্যার কারণেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘লাল তারকা’ প্রদান করা হবে। 

সম্প্রতি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দের সভাপতিত্বে বেসরকারি বিশ্ববদ্যিালয় বিভাগের সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিগগিরই এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহিত করা হবে।

অনুমোদিত প্রোগ্রাম ও এর আসন সংখ্যা নিশ্চিত হয়ে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ারও আহ্বান জানায় ইউজিসি।  লাল তারকা চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি না করানোর পরামর্শও দিয়েছে ইউজিসি।

ইউজিসি’র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনুমোদিত আসনের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করার কোনও সুযোগ নেই। কোনও বিশ্ববিদ্যালয় এটি করে থাকলে তা আইনগতভাবে বৈধ হবে না। অতিরিক্ত ভর্তি হওয়া এসব শিক্ষার্থীর সনদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কিছু কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করে থাকে।’

তদন্ত কমিটি

ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে ইউজিসি অনুমোদিত আসন সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ইউজিসি’র একজন সদস্যকে প্রধান করে চার সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার ও বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে রবিবার (১৮ জুলাই) ইউজিসিতে তলব করা হলে তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বলে ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও প্রোগ্রামে শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই ইউজিসি থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয়। শিক্ষক সংখ্যা ও ল্যাব সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রোগ্রামের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয় কমিশন। ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বিষয়ে ইউজিসি গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো প্রোগ্রামে এক সেমিস্টারের সেসনে ৯০০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি ও যথাযথভাবে শিক্ষাদান করার সক্ষমতা বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েরই নেই বলে উল্লেখ করেন  বিশ্ববিৎ চন্দ।