অনলাইন শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে ইউজিসির আহ্বান

অনলাইন শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্রাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। সোমবার (২৬ জুলাই) ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আয়োজিত বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য ওপেন রিসোর্স তৈরি, ব্যবহার এবং অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনলাইন শিক্ষা আমাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অনলাইন শিক্ষার গুণগতমান বৃদ্ধি সময়ের দাবি। অনলাইনে শুধু লেকচার দিলেই চলবে না; বরং অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের পাশাপাশি তাদের অর্জন যাচাইয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, অনলাইন শিক্ষা কার্যকর হবে না।’

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে কার্যকর করতে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশের সব স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি শক্তিশালী ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সেবা নিশ্চিত করতে না পারলে সব শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হবে না। সরকারের বিশেষ উদ্যোগের ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হলেও অনেক স্থানেই ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক অনেক দুর্বল। তাছাড়া ডিভাইস কেনার সামর্থ্যও অনেক শিক্ষার্থীর নেই। এ ক্ষেত্রে, ইউজিসি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডিভাইস কিনতে ঋণ দেওয়া এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।’

কাজী শহীদুল্লাহ আরও বলেন, ‘অনলাইন ও ব্লেন্ডেড লার্নিং সম্পর্কে শিক্ষকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা না গেলে এই শিক্ষা কার্যক্রম কার্যকর করা যাবে না। করোনা পরবর্তী সময়েও অনলাইন শিক্ষা ও ব্লেন্ডেড লার্নিং কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। এ ব্যবস্থাকে টেকসই করতে ইউজিসি ব্লেন্ডেড লার্নিং পলিসি তৈরিতে কাজ করছে।’

কানাডার ভ্যানকুভারস্থ কমনওয়েলথ এডুকেশনাল মিডিয়া সেন্টার ফর এশিয়া (সেমকা)’ এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মাধু পারহাড় বলেন, ‘শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে শিক্ষা সংক্রান্ত কন্টেন্টগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তৈরি করা লেকচার নোট, টেক্সট, অ্যাসাইনমেন্ট পেপার, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন, গবেষণাপত্র ইত্যাতি উন্মুক্ত থাকলে একই বিষয়ের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে তা ব্যবহার করতে পারেন। এতে শিক্ষার বিস্তার সহজ হবে।’

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও কানাডার ভ্যানকুভারস্থ কমনওয়েলথ এডুকেশনাল মিডিয়া সেন্টার ফর এশিয়া (সেমকা)’র যৌথ উদ্যোগে পাঁচ দিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়। 

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, ইউজিসি সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান, সেমকা’র সিনিয়র প্রোগাম অফিসার (এডুকেশন) ড. মানস রঞ্জন পানিগ্রাহী। ইউজিসি’র আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া কর্মশালায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।