অবশেষে ভিকারুননিসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের শোকজ প্রত্যাহার

আদালতের আদেশের পর রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগমের বিরুদ্ধে জারি করা শোকজ প্রত্যাহার করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। একইসঙ্গে তার বেতনও চালু করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট বেতন ছাড়ের আদেশ জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। সেই আদেশের পর বুধবার (১৩ অক্টোবর) তার বেতন চালু হয়েছে।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ (১৪ অক্টোবর) সেপ্টেম্বর মাসের বেতন তুলেছি। বকেয়া বেতন এখনও পাইনি। তবে মামলার আদেশে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের গত ২৭ সেপ্টেম্বরের স্বাক্ষরিত শোকজ প্রত্যাহারের অফিস আদেশটি বুধবার (১৩ অক্টোবর) ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

আদেশে জানানো হয়, ঢাকা মহানগরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক (অর্থনীতি) হাসিনা বেগমের এমপিও স্থগিত থাকার পরও কীভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করা হয়েছে- এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পক্ষ থেকে গত ২ মার্চ ব্যাখ্যা দাখিলের জন্য পত্র দেওয়া হয়েছিল। ওই পত্রটি এতদ্বারা বাতিল করা হলো।’

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বেতন বন্ধ করা সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের আদেশের কার্যক্রম স্থগিত থাকার পরও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়াই গত বছর নভেম্বর মাস থেকে বেতন বন্ধ করে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। শুধু তাই নয়, সাবেক অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানো নোটিস দেওয়া হয়, কেন দুই মাসের বেতন অতিরিক্ত উত্তালন করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেতন বন্ধের ওই নির্দেশনা সংক্রান্ত আদেশের বিরুদ্ধে সাবেক অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম ২০২০ সালে হাইকোর্ট রিট আবেদন করেন। ওই রিটে হাইকোর্ট মন্ত্রণালয়ের আদেশের ওপর ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।

ওই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সরকার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (১২৯৬/২০২০) দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সরকার পক্ষের আপিল ২০২০ সালে ৮ অক্টোবর খারিজ করে দেন।

অপরদিকে করোনার কারণে ২০২০ সালের ১১ আগস্ট সব ধরনের স্থগিতাদেশ আদালত পূর্ণাঙ্গভাবে না খোলা পর্যন্ত বর্ধিত হবে বলে আদেশ জারি করেন প্রধান বিচারপতি। ওই আদেশ অমান্য করে ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে হাসিনা বেগমের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ বন্ধ করে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। আদালতে মামলা চলাকালে বেতন বন্ধে মন্ত্রণালয়ের কোনও নির্দেশনা না থাকলেও বেতন বন্ধ করা হয়।

এই ঘটনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ বছরের ১ মার্চ লিগ্যাল নোটিস দিয়ে বেতন ছাড়ের জন্য অনুরোধ করেন হাসিনা বেগম। ওই নোটিসের পরও বেতন ছাড় না করায় গত ৭ মার্চ আদালত অবমাননার মামলা করেন হাইকোর্টে। মামলাটি আপিল বিভাগে শুনানির এক পর্যায়ে ২৯ আগস্ট বাধ্য হয়ে বেতন ছাড়ের নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।