স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

করোনা মহামারি কাটিয়ে প্রায় ৯ মাস বিলম্বে শুরু হলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আজ রবিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া এ পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী। 

কার্তিকের শেষ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে আজ সকালে হিম আবহাওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হয় শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা মাস্ক এবং শীতের কাপড় পরে পরীক্ষায় অংশ নিতে উপস্থিত হয়েছে কেন্দ্রে। কেন্দ্রগুলোর সামনে অপেক্ষা করছিলেন অভিভাবকরা।

সকালে রাজধানীর মতিঝিল বয়েজ স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এসময় তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে বাইরে অভিভাবকরা যেখানে দাঁড়াচ্ছেন, সেখানে অনেক ভিড়। সেখানে হয়তো তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আমরা আগেও অনুরোধ জানিয়েছিলাম, আবার অনুরোধ জানাবো বাইরে যেখানেই থাকবেন, ভিড় বা জটলা করবেন না।’

শেষ সময়ে ঝালিয়ে নিচ্ছেন এক পরীক্ষার্থী

করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গেল সেপ্টেম্বরে শুরু হয় শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। আর এ কারণে সাধারণত বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই পাবলিক পরীক্ষাও দফায় দফায় পেছানো হয়। এমনকি গত বছরের এইচএসসি’র মতো পরীক্ষা না নিয়েই উত্তীর্ণ করে (অটো পাস) দেওয়াসহ নানা ধরনের প্রস্তাবনাও আসে। অবশেষে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় বেশ কয়েক মাস দেরিতে হলেও পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তবে দীর্ঘদিন শ্রেণি পাঠদান না হওয়ায় এবারের পরীক্ষা হচ্ছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। এবছর একজন শিক্ষার্থীকে নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। আবশ্যিক বিষয়ে পরীক্ষা এ বছর হচ্ছে না। সূচিতে প্রকাশিত বিষয়গুলোর মধ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।

বাইরে অভিভাবকদের জটলা

পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী সকালের পরীক্ষা ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা এবং বিকালের পরীক্ষা বেলা ২টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম দিন সকালে এসএসসি’র পদার্থ বিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই সঙ্গে দাখিলের কোরআন মজিদ ও তাজভিদ ও কারিগরির (ভোকেশনাল) পদার্থবিজ্ঞান-২ (সৃজনশীল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চূড়ান্ত সূচিতে এদিন বিকালে কোনও পরীক্ষা রাখা হয়নি। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে এসএসসিতে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন এবং ভোকেশনালে ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন। এবার প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। বৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

পরীক্ষার বিশেষ নির্দেশনায় জানানো হয়, কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কক্ষে গিয়ে আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট। পরীক্ষা শেষে ৩০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।