রফিকুল ইসলাম ছিলেন আলোর দিশারী

জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম স্মরণে  ‘ও আলোর পথ যাত্রী’ নামক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় ইউল্যাবের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে এ আয়োজন করা হয়।

ইউল্যাবের ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সৈয়দা ফারজানা সুলতানার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান। তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে আমি খালু হিসেবে জানি ১৯৮১-৮২ সাল থেকে। আমার খুব সৌভাগ্য যে ইউল্যাবের সূচনা থেকে আমি উনার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। উনার সঙ্গে থাকার সুবাদে আমি তার কাছ থেকে গান, কবিতাসহ নানা কিছু শোনার সুযোগ পেয়েছি। উনি এমন অনেক কিছু আমাকে বলেছেন, যেটা আমি জানতাম না।’

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনিসুর রহমান, সংবাদ উপস্থাপক ইকবাল বাহার চৌধুরী, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মফিদুল হক, বাংলা অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা, কবি কামাল চৌধুরী, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ইউল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. কাজী আনিস আহমেদ, ইউল্যাবের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট কাজী শাহেদ আহমেদ, আসাদুজ্জামান নূর, ( এমপি) প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। তিনি ভাষা আন্দোলনের অনেকগুলো ছবি তুলেছিলেন; যা এখনও সংরক্ষিত আছে। তিনি বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে সঠিক ধারণা দিয়ে গিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক  থাকাকালীন তিনি বাংলা ভাষাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। বাংলাদেশের জাগরণ আর রফিকুল ইসলাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বক্তারা আরও বলেন, রফিকুল ইসলাম ছিলেন সার্বজনীন সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি নিজেই তার নিজের তুলনা। স্যার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উৎযাপন কমিটির সভাপতি ছিলেন। মৃত্যুর পূর্বে তার স্বপ্ন ছিল এটি উৎযাপন করা, আর তা তিনি করতে পেরেছেন। তিনি যেখানেই থাকবেন সম্মানের সাথে থাকবেন। 

অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করে তাঁর সহধর্মিনী জাহানারা ইসলাম বলেন, রফিকুল ইসলামের কথা বলে তো শেষ করতে পারবো না। ওর স্মৃতিচারণের সময় এখনও আসেনি। কারণ ওর স্মৃতি তো এখনও জ্বলজ্বল করছে আমার চোখের সামনে। ওর মৃত্যু এত আকস্মিকভাবে হয়ে গেছে, আমরা তৈরি ছিলাম না। রফিকের মূল্যায়ন করা আমার পক্ষে খুব কঠিন। নিবৃত্তিচারী লোকটা নিবৃত্তেই সাহিত্য চর্চা করতো। ও কোনও দিন রাগারাগি-ঝগড়াঝাটি করতো না। মোটকথা রফিকুল ইসলাম একজন পরিমিত পরিচ্ছন্ন লোক আমার মতে। আমার সুদীর্ঘ বিবাহিত জীবনে ও এভাবেই অধিষ্ঠিত ছিল। এছাড়াও বোন মাসুমা খাতুন, ছেলে বর্ষন ইসলাম ও নাতনি সারা শবনম ইংরেজিতে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের স্মৃতিচারণ করেন।

অনুষ্ঠানের সূচনালগ্নে অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের প্রিয় নজরুল সংগীত গেয়ে শোনান প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নাশিদ কামাল চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে নজরুল সংগীত গেয়ে শোনান অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের প্রিয় শিল্পী খাইরুল আনাম শাকিল।