অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি

দেশের বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষকের এমপিওভুক্তির দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন। সোমবার (১৬ মে) ১০টা থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে লাগাতার অবস্থান  কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা।   

লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকরা জানান, বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স স্তরে বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত সারা দেশে সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষককে জনবলে অন্তর্ভুক্তি না থাকার অজুহাতে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে সরকারি সুযোগ-সুবিধার বাইরে রাখা হয়েছে।  প্রতিষ্ঠান থেকে শতভাগ বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ কলেজ কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয় না। করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, নামমাত্র বেতনটুকুও বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা মানবেতর জীবন-যাবপন করেছে, এখনও করছেন।  

বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘একই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পেয়ে সদ্য জাতীয়করণ করা কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকরা ক্যাডার বা নন-ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকরা জনবলে না থাকার পরেও এমপিওভুক্ত হয়েছেন, হচ্ছেন। অপরদিকে কামিল (মাস্টার্স) শ্রেণির শিক্ষকরাও এমপিওভুক্ত হয়েছেন। অথচ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা এনটিআরসিএ সনদধারী হয়েও জনবল ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না, যা চরম বৈষম্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থী।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা কামাল বলেন, ‘দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে পেশাগত দাবি আদায়ের জন্য অনেক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করার পরেও অদ্যাবধি শিক্ষকরা সরকারি বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকারের মাধ্যমে শিক্ষা সেক্টরের অনেক বৈষম্য কমেছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত দেশের সাড়ে পাঁচ হাজার শিক্ষক এখনও এমপিওভুক্তির বাইরে রয়েছেন।’

মোস্তফা কামাল জানান, ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক নির্দেশনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত নবম ও দশম সংসদের স্হায়ী কমিটির সুপারিশ এবং জাতীয় শিক্ষানীতির কৌশল বাস্তবায়নের জন্য এসব শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা অত্যন্ত যৌক্তিক ছিল। এসব শিক্ষককে এমপিও দিতে প্রতিমাসে ১২ কোটি বছরে বছরে ১৪৪ কোটি টাকার বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ প্রয়োজন। জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করে এই বরাদ্দ দিলেই সম্ভব, কিন্তু তা করা হচ্ছে না। আমরা চাই, জনবল কাঠামো সংশোধন করে, অথবা বিশেষ ব্যবস্থায় এমপিওভুক্ত করা হোক। এমপিও ঘোষণার আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা লাগাতার অস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’