শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শপথবাক্য ঠিকমতো পড়ানো হয় না

গত বছরের শেষ দিকে দেশের মাধ্যমিক স্তরের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কিন্তু শপথ পাঠে মনোযোগ নেই প্রতিষ্ঠানগুলোর। করোনার কারণ দেখিয়ে বেশিরভাগ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন অ্যাসেম্বলিও হয় না।

শপথবাক্য পাঠ করানো হচ্ছে কিনা বা ঠিকমতো অ্যাসেম্বলি হচ্ছে কিনা তা নজরদারিও হচ্ছে না। ম্যানেজিং কমিটির ওপর এর দায় থাকলেও কমিটির নজর নেই এসব বিষয়ে। ফলে অনেকটা যেমন খুশি তেমন ভাবেই চলছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। যদিও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এই বিষয়ে কিছুটা নিয়মের মধ্যে রয়েছে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগ থেকে শপথ পাঠ করানোর ব্যাবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচলককে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশের পর ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শপথবাক্য ঠিকমতো পাঠ করানো নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসক, উপজেলা বা থানা নির্বাহী অফিসার, জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদেরও নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শপথবাক্যটি এমন— ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা।

আমি দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহিদদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না। দেশকে ভালোবাসবো, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলবো। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন।’

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত তারা নিয়ম মেনেছে। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলছেন, হঠাৎ অ্যাসেম্বলি হলে তখন মাঝেমধ্যে শপথবাক্য পড়ানো হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে গুরুত্ব দিলেও বেশিরভাগের অ্যাসেম্বলিও ঠিকমতো হয় না।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বাশিস) সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, ‘এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সব নির্দেশ মানতে বাধ্য। তাই সেগুলোতে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। বৃষ্টি হলে অ্যসেম্বলি হয় না। তাছাড়া এমপিওভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি হয়। শপথবাক্যও পড়ানো হয়। হতে পারে কোনও প্রতিষ্ঠান গুরুত্ব দিচ্ছে না। তবে সংখ্যায় কম। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি মনিটরিং নেই। কিন্ডারগার্টেনেও গুরুত্ব কম। এছাড়া ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়েও মনিটরিং হয় না তেমন।’